আল্লাহ । আমাদের স্রষ্টা। মালিক। পরম প্রিয় প্রভু- প্রভু এবং প্রভু। আমরা তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন। আল্লাহ এক। অদ্বিতীয়। তাঁর কোনো শরিক নেই। এক ও এককত্বের এ বিশ্বাসের নাম ঈমান। যে কাউকে একজন মুসলমান হতে হলে প্রথমেই স্বীকার করতে হবে এ বিশ্বাস। ‘আল্লাহ এক অদ্বিতীয়’- এ চেতনা ধারণ করতে হয় মুমিন মাত্র সবাইকে।
বন্ধুরা! আজকে আমরা ঈমানের এ সূত্রটি জানবো। শুনবে আমাদের পরম স্রষ্টা আল্লাহর পরিচয়-আল্লাহর ভাষায়।
আল্লাহ তা’আলা আমাদের লক্ষ্য করে বলছেন, ‘তিনি পবিত্র মহান। তিনিই আল্লাহ, তিনি এক, প্রবল পরাক্রান্ত।’ (সুরা যুমার: ৪)
অন্যত্র বলেন, ‘তোমরা বলো, ‘আমরা ঈমান এনেছি আমাদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে এবং তোমাদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে তার প্রতি এবং আমাদের ইলাহ ও তোমাদের ইলাহ তো একই। আর আমরা তাঁরই কাছে আত্মসমর্পণকারী’।
(সুরা আনকাবুত: ৪৬)
প্রিয় বন্ধুরা আমার! এ জগতে জ্ঞানহীন অনেক পাপী আল্লাহকে স্বীকার করতে চায় না। তাদের জ্ঞানহীন এ বিশ্বাসের দুয়ারে আঘাত হেনে আল্লাহ তা’আলা তাঁর এককত্ব প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘যদি আসমান ও জমিনে আল্লাহ ছাড়া বহু ইলাহ থাকত তবে উভয়ই ধ্বংস হয়ে যেত, সুতরাং তারা যা বলে, আরশের রব আল্লাহ তা থেকে পবিত্র’।
(সুরাআম্বিয়া:২২)
সত্যিই! তোমাদের যুক্তি কী বলে? ধরো দু’জন স্রষ্টা। একজন চাইবেন আজ বৃষ্টি হোক। অন্যজন বলবেন, না হলে ভালো হয়। এক স্রষ্টা বলবেন, আজ সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উঠবে অন্যজন বলবেন, না! পূর্ব দিক থেকে উঠবে। এভাবে দুই স্রষ্টার মারামারিতে হ-য-ব-র-ল অবস্থার তৈরি হয়ে এক পর্যায়ে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। কত চমৎকার যুক্তি দিয়ে আল্লাহ তা’আলা বুঝিয়েছেন আমাদের। প্রমাণ করেছেন তাঁর এককত্ব। আরো কী বলেছেন? শোন! ‘আল্লাহ কোনো সন্তান গ্রহণ করেননি, তাঁর সাথে অন্য কোনো ইলাহও নেই। (যদি থাকত) তবে প্রত্যেক ইলাহ নিজের সৃষ্টিকে নিয়ে পৃথক হয়ে যেত এবং একে অন্যের উপর প্রাধান্য বিস্তার করত; তারা যা বর্ণনা করে তা থেকে আল্লাহ কত পবিত্র! তিনি গায়েব ও উপস্থিতের জ্ঞানী, তারা যা শরিক করে তিনি তার ঊর্ধ্বে।’ (সুরা মুমিনুন: ৯১)।
‘আল্লাহ এক অদ্বিতীয়। তাঁর সাথে কেউ শরিক নেই-বিশ্বাসের এ ধারা অনন্ত। একজন পাপিষ্ঠ ‘লাইলাহার’ মাধ্যমে পূত-পবিত্র হয়ে ওঠে। বিশ্বাসের এ খুশবুতে মাতোয়ারা অযুত প্রাণ। বিশ্বাসের এ খুশবুু যেসব হৃদয় ছুঁয়েছে তাদেরকে করেছে ধন্য। অবিশ্বাসীরা আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহ শরিক করে। আল্লাহ ব্যতীত অন্যের কাছে আশ্রয় চায় কিন্তু আল্লাহ ছাড়া কল্পিত সব ইলাহ মানুষকে সাহায্য করতে অক্ষম। অনেকে আল্লাহকে তো মানে কিন্তু সাথে অন্য ইলাহরও আশ্রয় চায়। আল্লাহ তা’আলা তা থেকেও পবিত্র। অন্য শরিকরা মানুষের সব প্রয়োজন পূরণ করতে অক্ষম। শোনবে সে কথা আল্লাহর ভাষায়? তবে শোন! আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ সেই সত্তা যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তারপর তোমাদেরকে রিয্ক দিয়েছেন। এরপর তিনি তোমাদের মৃত্যু দেবেন, পরে আবার তোমাদের জীবন দেবেন। তোমাদের শরিকদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি, যে এ থেকে কোনো কিছু করতে পারবে? তিনি পবিত্র এবং তারা যাদের শরিক করে তা থেকে তিনি ঊর্ধ্বে।’
(সুরা রূম: ৪০)
তাই একজন সাচ্চা মুমিন হতে হলে আমাদেরকে পরিপূর্ণভাবে ‘আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়’ এ বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। শোন, যারা আল্লাহ এক বিশ্বাস করে না আল্লাহ সে সব কাফিরদেরকে ভালোবাসেন না। তাঁর ভাষাতেই শোন! ‘তিনি তাদের প্রতিদান দেন, যারা ঈমান আনে এবং সৎকাজ করে। নিশ্চয় তিনি কাফিরদের ভালবাসেন না।
(সুরা রূম: ৪৫)
তাই এসো, আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হৃদয়ে জ্বালিয়ে রাখি বিশ্বাসের এ প্রদীপ। আল্লাহ সহায় হোন আমাদের।