ঈমান। সবার আগে। মানুষের অনন্ত জীবনের ভিত্তি এ ঈমানের উপর। একজন শিশু ঈমান নিয়ে জন্মায়। কিন্তু তার বাবা-মা তাকে ভিন্নধর্মাবালম্বি বানায়। একজন মুমিনের হৃদয়ের পরম প্রিয় ধন ঈমান। ঈমান ছাড়া মানুষ অপায়া। বলতে পারি, আগুনের টুকরো। জাহান্নামের ইন্ধন।
বন্ধুরা! আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, ‘তারাই মুমিন যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনে, পরে সন্দেহ পোষণ করে না এবং জীবনও সম্পদ দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে তারাই সত্যনিষ্ঠ। (সূরা হুজুরাত)। আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুল সা.-এর প্রতি ঈমান আনার অর্থ কী? এর সরল উত্তর তো হলো, আল্লাহকে আল্লাহ ও রাসুলকে রাসুল বলে বিশ্বাস করা। আর এর ব্যাপক অর্থ আল্লাহ ও রাসুল আনিত ইসলামের পূর্ণাঙ্গ অনুশাসন মেনে চলা।
বন্ধুরা! আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে ঈমানদারের ঘরে জন্মগ্রহণ করার তাওফিক দান করেছেন তাই আমরা সহজে মুমিন হতে পেরেছি। এতেই আমার দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়নি। ঈমান আনার অর্থ হচ্ছে, আমি আমার রব আল্লাহ ও তার রাসুলের সাথে একটি কমিটমেন্ট করেছি। তাই এ কমিটমেন্টের বিষয়গুলোও আমাদেরকে জানতে হবে। বুঝতে হবে। তবেই আমরা খাঁটি ঈমানদার হতে পারবো। এ কমিটমেন্টগুলো জানা ও সে অনুযায়ী কাজ করাকে বলে আমল। কমিটমেন্ট রক্ষা না করলে আবার ঈমান ভঙ্গ হয়ে যায়। তাই আমাদেরকে ঈমান ভঙ্গের কারণসমূহও জানতে হবে। তাহলে আল্লাহ ও তার রাসুল সা.-এর পূর্ণ আনুগত্য হবে। আর পূর্ণ আনুগত্যের মাধ্যমে পূর্ণ ঈমানদার হওয়া সম্ভব। দেখ! আমরা অনেকেই অজু ভঙ্গের কারণ জানি, নামাজ ভঙ্গের কারণ জানি, রোজা ভঙ্গের কারণ জানি কিন্তু ঈমানদার হিসেবে ঈমান ভঙ্গের কারণ জানি না। একজন মুসলমান হিসেবে এ আমাদের ব্যর্থতা।
প্রিয় বন্ধুরা আমার! ঈমান ভঙ্গের চর্চা আমাদের মধ্যে যেন জাগুরুক না হয় সে জন্য এখন থেকেই এসব বিষয় আমাদের জানতে হবে। ঈমানের অপর নাম তাওহিদ। কালিমা তায়্যিবা পড়ে একমাত্র আল্লাহর একত্মবাদ মেনে নেয়ার নাম তাওহিদ। ইবাদতের একমাত্র উপযুক্ত আল্লাহ তা’আলা। তার সাথে কাউকে শরিক না করা। মৃত ব্যক্তির নিকট কিছু আশা না করা। মৃত কারো নামে মান্নত না করা ইত্যাদি তাওহিদের পাঠ। আজকে আমাদের সমাজে ধর্মের নামে অনেক তাওহিদ পরিপন্থি কাজে হচ্ছে। যেমন ধরো! বিভিন্ন মাজারে মোমবাতি প্রজ্জলন, কবরকে সেজদা করা, কবরে মান্নত করা, বিভিন্ন বাবার কাছে কোন কিছু কামনা করা এসবই শিরক ও তাওহিদ পরিপন্থি।
প্রিয় বন্ধুরা! আমাদের সমাজের প্রতিটি পরতে পরতে ঈমান বিধ্বংসি শিরক ঢুকে পড়ছে। বহমান এ নষ্ট সময়ে অজু ভঙ্গের কারণের সাথে সাথে ঈমান ভঙ্গের কারণগুলো জেনে নিলে এবং সে অনুযায়ী আমল করলে হয়তো এ ধ্বংস থেকে বাঁচতে পারবো। প্রথমেই নিজেকে, তারপর পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে ঈমানযুক্ত ও শিরকমুক্ত করতে এগিয়ে আসতে হবে। সময়ের এ অবসরে এসো আমরা নিজেকে খাঁটি মুমিনরূপে গড়ে তোলার জন্য আমাদের পরম প্রিয়ধন ঈমানকে ঈমানের আলোকে সাজাই। একনিষ্ঠভাবে সমর্পিত হই রব্বে কাবার ঐ দুয়ারে।
