নানা-নাতির সম্পর্কটা সব সময় কাছাকাছি। এতটাই কাছাকাছি- নাতির যত আবদার সব নানার কাছে, যত প্রশ্ন সব নানার কাছে, যত কৈফিয়ত সব নানার কাছে। পৃথিবীর সব জায়গাই নানা-নাতির সম্পর্ক নিয়ে কিছু বলা যায় কিছু লেখা যায়। তেমনি একজন নানা-নাতির সম্পর্ক নিয়ে বলব যিনি বিখ্যাত নানাদের নানা।
পৃথিবীর বিখ্যাত নাতিদের নাতি। যার নাম হযরত মুহাম্মদ সা. ও তাঁর অতি আদরের নাতি হযরত হুসাইন রা.।
আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ সা. কখনো নাতিদের ছাড়া কিছু খান নি। নাতিদের কে না দেখে কোথাও যাননি এবং নাতিদেরকে খুব ভালোবাসতেন। আদর করতেন ও চুমু খেতেন।
একদিন নবী করীম সা. বসে বসে কি যেন ভাবছিলেন। হঠাৎ হুসাইন হাজির। হুসাইন বলল- আচ্ছা নানা তোমাকে কয়েকটি প্রশ্ন করব তুমি কিন্তু সঠিক ভাবে উত্তর দিবা।
-আচ্ছা বলেন।
-বলো তো নানা তুমি বড় না আমি বড়। তোমার দাম বেশি না আমার দাম বেশি।
নানা বলল- তুমিই বলো।
-আচ্ছা নানা তোমার নানীর নাম কি উজ্জা? তোমার নানীকে পৃথিবীর কয়জন লোক চিনে? আমার নানীর নাম তুমি জানো? আমার নানীর নাম কি? আমার নানীকে পৃথিবীর সবাই চিনে। আমার নানীকে স্বয়ং আল্লাহতায়ালা সালাম দিয়েছেন। আমার নানীর নাম হযরত খাদীজাতুল কুবরা রা.।
হুজুর সা. আশ্চর্য হলেন- তাই তো। তুমি আমার চেয়ে বড়।
দ্বিতীয় প্রশ্ন- আচ্ছা নানা, বলো তো তোমার মায়ের নাম কি?
হুজুর সা. বললেন- আমিনা।
-আমিনাকে কয়জন লোক চেনে পৃথিবীর। আমার মায়ের নাম কি তোমার জানা আছে? আমারা মাকে পৃথিবীর সবাই চেনে। শুধু চেনে না আমার মা বেহেস্তের সব রমনীদের সর্দার হবে। আমার মায়ের নাম ফাতিমা রা.।
বিশ^নবী সা. বললেন- তাই তো।
-এবার বল নানা তুমি বড় না আমি বড়?
নানা বললেন- তুমি বড়।
তৃতীয় প্রশ্ন- আচ্ছা নানা বলো তো তোমার আব্বার নাম কি?
হুজুর সা. বললেন- আব্দুল্লাহ।
– শুধু আব্দুল্লাহ। তোমার আব্বাকে পৃথিবীর কয়জন মানুষ চেনে? আমার আব্বার নাম কি তোমার জানা আছে? আমার আব্বাকে চেনে না পৃথিবীর এমন কোন মানুষ নেই। আমার আব্বার নাম শেরে খোদা হযরত আলী রা. আমার আব্বা ইসলামের চতুর্থ খলিফা। আমার আব্বা মা ফাতেমার স্বামী। বেহেস্তের সুসংবাদ পাওয়া সাহাবী।
রসুল সা. বললেন- তাইতো হুসাইন তোমার কথাই ঠিক। তুমি বড়।
চতুর্থ প্রশ্ন- আচ্ছা নানা বলো তো তোমার নানার নাম কি ওয়াহাব ইবনে আবদে মানাফ। তোমার নানার কি কোন পরিচয় আছে? আমার নানাকে তুমি চেন? আমার নানাকে পৃথিবীর সবাই চেনে। গাছে চেনে, মাছে চেনে। আমার নানাকে সৃষ্টি না করলে পৃথিবীর কিছুই সৃষ্টি হতো না। আমার নানা পরকালে উম্মতের সাফায়াতকারী। আল্লাহর একমাত্র বন্ধু। আমার নানার নাম হযরত মুহাম্মদ সা.।
এবার হুজুর সা. নাতীকে জড়িয়ে ধরলেন চুমু খেলেন। আর বললেন- সত্যিই হুসাইন আজ আমি তোমার নিকট হেরে গেলাম। তুমি বড়। তুমি সবার চেয়ে বড়।
এই বলে রসুল সা.-এর দু চোখ থেকে পানি পড়তে লাগল।
