পাঁচটি বৃষ্টির ছড়া

পাঁচটি বৃষ্টির ছড়া

আষাঢ়ে
মাহফুজ ইকরাম

সাদা-কালো মেঘগুলো জমা হয় আকাশে
‘আয় খোকা ঘরে আয়’ মায়ের ওই ডাক আসে।
গুম গুম ডাকে দেয়া, শব্দটা দূরে যায়,
পাখিগুলো ঠাঁই নিতে বাঁশবনে উড়ে যায়।

আকাশের বুক ভেঙে মেঘ থেকে ঝরে জল,
ডোবা নালা একাকার-ননিমিষেই ভরে জল।
হাঁসগুলো পানি পেয়ে চলে যায় অদূরে,
নকশীর কাঁথা বোনে ঘরে ঘরে বধূ রে!

কাজ নেই সারাদিন ঘরে বসে থাকা হয়,
কবিতার ডায়েরিতে কতো ছবি আঁকা হয়।
আনমনা হয়ে বসে জানালার পাশে কেউ,
বৃষ্টিতে ভিজে গিয়ে খক্ খক্ কাশে কেউ।

খালিপায়ে হেঁটে যায় মেঠোপথ ধরে কেউ,
কাদামাখা রাস্তায় পিছলিয়ে পড়ে কেউ।
কী দারুণ ফুল ফোটে কদমের ডালে ওই!
গ্রাম সাজে অপরূপ! বর্ষার কালে ওই।

বর্ষাগীতি
ছাদির হুসাইন

বর্ষা মানে ফর্সা কালো
দিনদুপুরে দেখা,
বর্ষা মানে হঠাৎ বৃষ্টি
হঠাৎ আলো রেখা।

বর্ষা মানে নদীর বুকে
অথৈজলের খেলা,
বর্ষা মানে কদম ডালে
হলদে ফুলের মেলা।

বর্ষা মানে আকাশ পানে
মেঘের লুকোচুরি,
বর্ষা মানে কবির গানে
নতুন স্বপ্ন জুড়ি।

জ্যৈষ্ঠ মাসে বৃষ্টি
রুমী খান

জ্যৈষ্ঠ মাসে বৃষ্টি হলে
কৃষকের হয় কষ্ট,
পানিতে সব ধান ডুবে যায়
ধানগুলো হয় নষ্ট।

আকাশ ডাকে গুরুম গুরুম
হতে পারে বৃষ্টি,
কখন যে মেঘ পড়বে ঝরে
সেই দিকে যে দৃষ্টি।

বর্ষায় ব্যাঙ ছানা
মো. জোবাইদুল ইসলাম

বৃষ্টি নামে সকাল-দুপুর
রিমঝিমঝিম বাজায় নূপুর
সেই নূপুরের শব্দ শুনে
ব্যাঙের ছানা সময় গোনে।

স্রোতের পানি যাচ্ছে বয়ে
স্রোতের টান যাচ্ছে সয়ে
পেলো এবার পাতার ভেলা
তারই উপর করছে খেলা।

পাতার ভেলা যাচ্ছে ভেসে
ব্যাঙ ছানাটা খেলছে হেসে
এমনি করে পৌঁছে যায় সে
কোলা ব্যাঙের নিজ দেশে।

বৃষ্টি পড়ে
আমীরুল ইসলাম ফুআদ

বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর
নদী-নালা খালে,
বৃষ্টি পড়ে সকাল বিকেল
ধান ক্ষেতেরই আলে।

বৃষ্টি পড়ে ফোঁটায় ফোঁটায়
কদম কেয়ার গায়ে,
বৃষ্টি পড়ে তিরতিরিয়ে
মাল্লা-মাঝির নায়ে।

বৃষ্টি পড়ে জানলা ছুঁয়ে
ছন পাতারই ঘরে,
বৃষ্টি পড়ে খোকার ছাতায়
বড্ড সুন্দর করে।

বৃষ্টি পড়ে নদীর ধারে
আরো খেলার মাঠে,
বৃষ্টি পড়ে আউশ ধানে
আমার গাঁয়ের হাটে।

Share on facebook
ফেইসবুক
Share on twitter
টুইটার

Leave a Comment

অন্যান্য