প্রিয় নবীর হে প্রিয় সাহাবী!

প্রিয় নবীর হে প্রিয় সাহাবী!

গোটা মদিনা সেদিন শোকে মূহ্যমান। কল্যাণকামী সঙ্গী ও প্রিয় নেতাকে হারিয়ে সবাই অশ্রুসিক্ত। সাহাবীরা পরস্পরে প্রিয় বন্ধু হারানোর শোকগাথা গাইছেন একে অপরকে জড়িয়ে ধরে। স্মৃতির ঝুলি হাতড়ে বেড়াতে থাকেন। আহ! তিনি কতো ভালো মানুষ ছিলেন, পরোপকারী ছিলেন এবং কতোটা নির্ভীক ও আল্লাহনির্ভর ছিলেন।
রাসূলুল্লাহ সা.-এর চোখ থেকেও গড়িয়ে পড়ছিল বেদনার অশ্রু। প্রিয় সাহাবীর লাশ আজ তাঁর কাঁধে। তিনি অত্যন্ত ভালোবাসতেন এই সাহাবীকে। এই ভালোবাসা ছিল প্রিয় সাহাবীর ঈমান ও তাকওয়ার সৌন্দর্যের কারণে। দান ও বদান্যতার প্রাচুর্যের কারণে। সাহস ও অকুতোভয় নেতৃত্বের কারণে। সুন্দর সিদ্ধান্ত ও হৃদয়স্পর্শী বক্তব্যের জন্য।
রাসূলুল্লাহ সা.-এর প্রিয় সাহাবীর নিথর মুখাবয়বের দিকে তাকালে তাঁর স্মৃতিতে ভেসে ওঠে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও সাহসিকতার কথা। আকাবার ১ম বাইয়াতে মদীনার কতিপয় সত্যান্বেষীর সঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. হযরত মুসআব ইবনে উমায়র রা.কে তাদের দীন শেখার জন্য পাঠালেন। তারা মদীনায় এসে ঈমানের দাওয়াত দিতে এমনকি নিজেদের মধ্যে দীনের চর্চা করতে ভয় পাচ্ছিলেন। তখন প্রিয় এই সাহাবীই তাদের জন্য রহমতের অনুগ্রহ প্রমাণিত হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন আবদুল আশহালের গোত্রপতি। মদীনার সজ্জন নেতা। প্রিয় অভিভাবক। নীতিবান তরুণ কর্তাব্যক্তি।

ইতিহাসের স্বর্ণমানব, বিচক্ষণ ও আত্মত্যাগী নেতা, রাসূলুল্লাহ সা.-এর প্রাণপ্রিয় সাহাবী হযরত সাদ ইবনে মুআয রা.-এর কথা। মদীনায় যখন ইসলামের চেরাগ ক্ষীণ আলোর বিস্তার ঘটাতে চলছিলো, তখন তিনিই একদিন উদ্বিগ্ন হয়ে নতুন ধর্মের অনুসারীদের ব্যপ্তি রোধ করার মানসে তার খালাতোভাই আসআদ ইবনে যুরারার কাছে উসায়দ ইবনে হনায়রকে পাঠালেন। উসায়দ অস্ত্রসজ্জিত হয়ে বেরিয়ে পড়লেন। তাকে দেখে হযরত আসআদ রা. মুসআবকে বললেন, গোত্রের নেতা উসায়দ এগিয়ে আসছেন! আল্লাহ করুন, তিনি যেন আপনার কথা শোনেন এবং মেনে নেন তবে কতই না ভালো হয়!
মুসআব বললেন, তিনি যদি এখানে এসে বসেন তবে অবশ্যই আমি তার সঙ্গে কথা বলব।
ইতোমধ্যেই তিনি এসে দাঁড়িয়ে গালাগাল শুরু করে দিলেন। তুমি আমাদের নাদান ও বোকা-পাঁঠা লোকগুলোকে ফুসলিয়ে পথভ্রষ্ট করতে এসেছ? তুমি আজই মদীনা ছেড়ে চলে যাবে। এরপর যদি তোমাকে এখানে দেখি তাহলে ভালো হবে না বলে দিচ্ছি।

মুসআব রা. বললেন, আপনি যদি আমাদের কথা শুনতেন তাহলে কতই না ভালো হতো। যদি আমাদের পছন্দ হয় কবুল করতেন। আর পছন্দ না হলে ছেড়ে চলে যাবেন।
উসায়দ বললেন, বেশ ভালো কথা। বলুন কী বলতে চান।
মুসআব রা. তাকে বোঝালেন ইসলাম কী। অতঃপর কুরআনের কিছু অংশ তিলাওয়াত করে শোনালেন। তিনি চুপচাপ সবকিছু শুনলেন। শেষে বললেন- হ্যাঁ এখন বলো, কেউ তোমাদের ধর্মে প্রবেশ করতে চাইলে তোমরা তাকে কী করো?
তিনি বললেন, আমরা তাকে গোসল করাই, পাক-সাফ কাপড় পরিয়ে তাকে কালেমা পড়িয়ে দেই। সেই সাথে দুই রাকাত নফল নামাজও পড়িয়ে দেয়া হয়।
তিনি ভাবগাম্ভীর্যের সাথে সব নিয়ম পালন করে মুসলমান হয়ে গেলেন। যাবার সময় বললেন, আমি গোত্রপতিকেও তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছি।

ওদিকে গোত্রপতি সাদ ইবনে মুআয উসায়দের অপেক্ষায় আছেন। আগমন পথে উসায়দকে দেখেই তিনি অবাক হলেন। তার চেহারায় সেই ঔদ্ধত্যভাব নেই, যা নিয়ে সে গিয়েছিল। বললেন, কী হয়েছে?
তিনি বললেন, আপনার ভাই আসআদকে ওরা মেরে ফেলতে পারে। আপনার যাওয়া দরকার। সাদ ইবনে মুআয বিলম্ব না করেই অস্ত্রসজ্জিত হয়ে রওয়ানা হলেন আসআদের বাড়ির দিকে।

আসআদ ছিলেন মদীনায় রাসূল সা.-এর নিযুক্ত বারো নকীবের একজন। রাসূল সা.-এর নিযুক্ত মুআল্লিম হযরত মুসআব ইবনে উমায়র রা. তার ঘরেই মেহমান হয়েছিলেন। সাদ ইবনে মুআয ক্ষিপ্রতার সাথে তাদের মজলিসে উপস্থিত হলেন। মজলিসে উপস্থিত সঙ্গীরা ভয় পেয়ে গেলেন। গোত্রপতি নাজানি কী কাণ্ডটাই ঘটিয়ে বসেন। আবার আশায় বুক বাঁধলেন, যদি গোত্রপতি মুসলমান হয়ে যান তাহলে আমাদের জন্য ভয়ের কোনো কারণ থাকবে না। কিন্তু আসআদ ও মুসআবকে নিরাপদে বসা দেখে সাদ অবাক হলেন।
তাহলে কি উসায়দ আমাকে ধোঁকা দিয়ে এখানে পাঠিয়েছে?
তিনি রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে উভয়কে লক্ষ করে বকাবকি শুরু করে দিলেন। আসআদকে বললেন, যদি তোমার ও আমার মাঝে আত্মীয়তার সম্পর্ক না থাকতো এবং মেহমান তোমার আশ্রিত না হতো তাহলে সে কিভাবে আমাদের মহল্লায় আসেন!
হযরত মুসআব ইবনে উমায়র ধৈর্য নিয়ে পরিস্থিতির মোকবেলা করলেন। তিনি বিনয়ের সাথে সাদ ইবনে মুআজকে আসন গ্রহণ করতে অনুরোধ জানালেন- বসুন, কথা না হয় বসেই বলুন। আমাদের দুটো কথা শুনুন। ভালো লাগলে গ্রহণ করবেন না হয় ছুঁড়ে ফেলে দিবেন।
মুসআব ইবনে উমায়রের কথায় মুগ্ধ হয়ে তিনি অনুসন্ধিৎসা নিয়ে সেখানে বসে গেলেন। কিছুক্ষণ আলোচনার পরে মন্ত্রমুগ্ধের মত তিনি জানতে চাইলেন ইসলাম কিভাবে গ্রহণ করতে হয়। হযরত মুসআব ইবনে উমায়র পরিস্থিতি আঁচ করতে চাইলেন। কিন্তু সাদ যেন অশান্ত হয়ে গেছেন। এই অবস্থা দেখে হযরত মুসআব ইবনে উমায়র তাকে বললেন, গোসল করে পবিত্র কাপড় পরে নিন। তিনি তাই করলেন। অতঃপর সবাইকে অবাক করে দিয়ে কালেমার শারাবান তাহুরা পান করে ইসলামে প্রবেশ করলেন। শুধু কি নিজে ইসলাম গ্রহণ করে ক্ষান্ত থেকেছেন? গোত্রের লোকদের কাছে এসে উচ্চকণ্ঠে ঘোষণা করলেন, সাদ ইবনে মুআয ইসলাম গ্রহণ করেছে, সুতরাং কওমের লোকেরা ইসলাম গ্রহণ না করলে তিনি তাদের সঙ্গে কথা বলা ছেড়ে দেবেন। তার ব্যক্তিত্বের প্রভাব এতোটাই ছিল যে, লোকেরা হুমড়ি খেয়ে পড়লো ইসলাম গ্রহণের জন্য। তার গোত্রের সকল নারী পুরুষ ইসলাম কবুল করেছিল সেদিন। এই সেই সাদ ইবনে মুআজ রা.।

রাসূলুল্লাহ সা. স্মৃতিতে হারিয়ে যাচ্ছিলেন বারবার। উত্তাল বদর প্রান্তর। ইসলামের প্রথম যুদ্ধের সেই অনিশ্চয়তার দোলাচল। জরাজীর্ণ মুসলিমবাহিনী নিয়ে কাফেরদের অস্ত্রেসস্ত্রে সজ্জিত বিরাটবাহিনীর মোকাবেলা হবে কি হবে না। আনসার সাহাবীদের ভূমিকা কেমন হবে। কারণ, তারা তো আল্লাহর রাসূল সা.কে শুধু মদীনার অভ্যন্তরে যেকোনো হুমকি থেকে রক্ষার অঙ্গীকার করেছিল কিন্তু বদরের এই যুদ্ধ তো মদীনা থেকে অনেক দূরে। রাসূলুল্লাহ সা.-এর চেহারায় চিন্তার ছাপ স্পষ্ট হয়ে উঠলো। মুহাজির সাহাবী হযরত আবু বকর সিদ্দিক রা. প্রমুখ আত্মোৎসর্গের মনোভাব নিয়ে উদ্দিপনামূলক বক্তৃতা দান করেন। রাসূলুল্লাহ সা. তাতেও স্বস্তি পাচ্ছিলেন না দেখে আনসার সাহাবী হযরত সাদ ইবনে মুআয রা. দাঁড়িয়ে জ্বালাময়ী বক্তৃতা করলেন। তিনি বললেন, রাসূলে আকরাম সম্ভবত ভেবেছেন, আনসারগণ মদীনা থেকে বের হয়ে রাসূলুল্লাহর সাহায্য করা নিজেদের কর্তব্য মনে করে কিনা। আমি আনসারদের পক্ষ হতে আরজ করতে চাই, আমরা সর্বাবস্থায় আল্লাহর রাসূলের সঙ্গে আছি। আপনি কারোর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হোন অথবা না হোন, আমাদের অর্থ-সম্পদ যতটা খুশি আপনি গ্রহণ করুন এবং যত খুশি আপনি দান করুন। আমাদের সম্পদের সেই অংশ যা আপনি গ্রহণ করবেন আমাদের নিকট পছন্দনীয় হবে সেই অংশ হতে যা আমাদের কাছে রেখে দেবেন। রাসূলুল্লাহ আমাদেরকে যেই হুকুম দেবেন আমরা তা সর্বান্তকরণে পালন করব। আপনি যদি গামাদানের ঝর্ণা পর্যন্ত অগ্রসর হন আমরা সঙ্গী হব। যদি আপনি সমুদ্রেই ঝাঁপিয়ে পড়েন আমরাও আপনার সঙ্গে সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়ব ইনশাআল্লাহ।
সেদিন প্রিয় সাহাবী সাদ ইবনে মুআজের এই আশ্বাসমূলক বক্তব্যই তাঁর শঙ্কাকে শক্তিতে পরিণত করেছিল।

আজ সেই সাদের জানাযার খাটিয়া রাসূলুল্লাহ সা.-এর সামনে। তিনি এটা ভাবতেই আবারও চোখ অশ্রুসজল হয়ে ওঠে। প্রিয় সাহাবীর জানাযায় রাসূলুল্লাহ সা. শুধু পায়ের পাতায় ভর করে নিজেকে তকলিফ দিয়ে হাঁটছিলেন। সাহাবীরা জানতে চাইলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, এভাবে কষ্ট করার কী কারণ হতে পারে?
তিনি বললেন, সাদের জানাযায় ফেরেশতাদের ব্যাপক উপস্থিতি আমার চলার যায়গা সংকীর্ণ করে দিয়েছে।
মদীনায় সেদিন অসংখ্য নুরানি সুরত লোকের সমাগম ঘটেছিল, আল্লাহর ফেরেশতাগণ সাদকে প্রশান্তির বিদায় জানাতে নেমে এসেছিলেন ধূলির ধরায়।

হযরত সাদ ইবনে মুআজ ছিলেন দীর্ঘকায় স্বাস্থ্যবান কিন্তু তার জানাযা বহনকারীদের মনে হল তারা খুবই হালকা বস্তু বহন করছেন। সাহাবীরা রাসূলুল্লাহ সা.-এর কাছে জানতে চাইলেন এর রহস্য। তিনি বললেন, তোমরা ছাড়াও তার অদৃশ্যমান আরও বহনকারী আছে। নিঃসন্দেহে সাদ ইবনে মুআজের ইন্তেকালে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠেছে।

রাসূলুল্লাহ সা.-এর প্রিয় এই সাহাবীর ইন্তেকাল কিভাবে হয়েছিল। বিদায়বেলায় আল্লাহর রাসূলকে এতোটা শোকাতুর বানিয়ে যাবার সেই ঘটনাও ছিল আনুগত্যের চরম এক দৃষ্টান্ত। হিজরি চতুর্থ সনে সম্মিলিত কুফরি শক্তির বিরুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর যুদ্ধকে ইতিহাস খন্দক বা আহযাবের যুদ্ধ হিসেবে স্মরণ করেছে। এটিই ছিল কুরাইশদের সঙ্গে মুসলিম বাহিনীর শেষ যুদ্ধ। রাসূলুল্লাহ সা. এই যুদ্ধের পরে বলেছিলেন, এখন থেকে আমরা তাদের ওপর আক্রমণ করবো, তারা আমাদের ওপর আক্রমণ করবে না।
সত্যিই তাই হয়েছিল। এরপরে কাফেরদের সমস্ত বিক্রম বিচূর্ণ হয়েছিল ইসলামের শ্রেষ্ঠত্বের ধাক্কায়।
এই যুদ্ধে হযরত সাদ ইবনে মুআজ রা. গুরুতর আহত হয়ে এই দোয়া করেছিলেন- হে আল্লাহ, তুমি যদি কুরাইশদের মধ্যে যুদ্ধের সমাপ্তি টেনে থাকো তাহলে আমাকে তোমার কাছে উঠিয়ে নাও।
তিনি আরও বলেছিলেন, বনু কুরাইযার ব্যপারে আমার চোখ শীতল করার আগে আমার মৃত্যু দিও না।
হযরত সাদের দোয়ার প্রথম অংশ আল্লাহ কবুল করেছিলেন। আর দোয়ার দ্বিতীয় অংশ কবুল হওয়ার ঘটনাটা এমনÑ
আহযাবের যুদ্ধের আগ থেকেই ইহুদি গোত্র বনু কুরাইযার সঙ্গে হযরত সাদ ইবনে মুআজের গোত্র আওসের মিত্রচুক্তি ছিল কিন্তু ইহুদীরা তার তোয়াক্কা না করে মুসলিমবাহিনীর বিরুদ্ধশক্তির সঙ্গে মদীনা অবরোধে অংশনেয় তারা। আহযাবের যুদ্ধ শেষ করে রাসূলুল্লাহ সা. ও সাহাবীরা অস্ত্র ত্যাগ না করতেই আল্লাহর পক্ষ হতে বনু কুরাইযার বিরুদ্ধে যুদ্ধের নির্দেশনা নিয়ে ফেরেশতা অবতীর্ণ হন। অবিলম্বে রাসূলুল্লাহ সা. সাহাবীদের নিয়ে জিহাদের দামামা বাজিয়ে রণাঙ্গনের পথ ধরেন। বনু কুরাইযায় গিয়ে মুসলিমবাহিনী তাদের পক্ষথেকে শান্তির আশা করছিলেন। কিন্তু কোনো সাড়া না পাওয়ায় হযরত আলী রা. সেনা বূহ্য থেকে বেরিয়ে দুর্গের পাশে গিয়ে দাঁড়ালে ইহুদীরা রাসূলুল্লাহ সা.-এর নামধরে গালাগাল করতে থাকে। শান্তিচুক্তিতে অনাগ্রহ দেখায়। রাসূলুল্লাহ সা. তখন দুর্গ অবরোধের সিদ্ধান্ত নিলেন।
দীর্ঘ একমাস অবরোধে ক্লান্ত হয়ে তারা ধরাদেয়। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলে তারা আবেদন জানায়, তাদের গোত্রের পূর্ব মিত্র আওসের নেতা হযরত সাদ ইবনে মুআজ যেন তাদের ফায়সালা করেন, তার সিদ্ধান্ত তারা মেনে নেবে। আসলে পূর্ব মিত্রত্বের কারণে তিনি তাদের পক্ষপাতিত্ব করবেন বলে তারা ভেবেছিল। এমনকি আওসের কতিপয় লোক এসেও কুরাইযায় ব্যাপারে তার কাছে সুপারিশ করল- হে সাদ, আপনি আপনার অধীনদের প্রতি অনুগ্রহ করুন। এরা আমাদের সঙ্গী ছিল। আপনি তাদেরকে ভুলে যাবেন না।

কিন্তু রাসূলুল্লাহ সা. যখন তার কাছে ফায়সালার ভার অর্পণ করলেন, তিনি ঘোষণা করলেন- এখন সাদের শেষ সময় ঘনিয়ে এসেছে। আল্লাহর ব্যাপারে কারো তিরস্কার তাকে স্পর্শ করবে না। আমি বনু কুরাইযার ব্যাপারে নির্দেশ দিচ্ছি, তাদের পুরুষেরকে হত্যা করা হোক, নারী ও শিশুদের বন্দি করা হোক এবং তাদের ধন-সম্পদ গনিমতে পরিগণিত করা হোক।
রাসূলুল্লাহ সা. তার সিদ্ধান্তে অত্যন্ত খুশি হলেন। বললেন- সাত আসমানের ওপরে রাব্বুল আলামিনও যে রায় স্থির করেছিলেন, তুমি সেই রায়ই ঘোষণা করেছো।

এই যুদ্ধ সমাপ্তির পর হযরত সাদের পুরনো জখম ফেটে রক্তের ধারা জারি হয়ে গেল। হায়াতের স্থিতি হয়নি, এভাবেই তিনি দুনিয়াকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন। আল্লাহ তাঁর প্রতি রহমত বর্ষণ করুন। তিনি ছিলেন মদীনায় রাসূলুল্লাহ সা.-এর প্রধান খুঁটি।
আল্লাহ তাঁর কবরকে রহমতের চাদরে আবৃত করুন। জান্নাতে তার মাকাম উন্নীত করুন। আমীন।

Share on facebook
ফেইসবুক
Share on twitter
টুইটার

Leave a Comment

অন্যান্য

দুঃখিত! এই বিভাগের অন্য কোনো পোস্ট নেই।