প্রিয় নকীব বন্ধুরা! এতদিন আমরা আল্লাহ তাআলার গুণাবলী নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আল্লাহ সম্পর্কে আমাদের বিশ্বাস কী হবে তা জেনেছি। এবার আমাদের বিশ্বাাসের একটি বড় জায়গা- প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে জানবো। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে আমাদের বিশ্বাস কেমন হবে তা আলোকপাত করবো।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সৌন্দর্য। শ্রেষ্ঠ নিয়ামত। অনুপম আদর্শের প্রতীক। তিনি আমাদের নবী ও রাসূল। আল্লাহর প্রিয় বান্দা তিনি। প্রিয় বন্ধু। ঘনিষ্ঠজন। আস্থা ও ভালোবাসার পাত্র। এ পৃথিবীতে আমাদের স্রষ্টা আল্লাহর পর তিনিই সবচেয়ে সম্মানিত। মর্যাদার অধিকারী। ইজ্জতের তিলক।
আমাদের প্রিয় নবী আরবের ভূমিতে পাঁচশ সত্তর সালে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। নবীর পরিবার হযরত ইবরাহিম আলাইহি ওয়াসাল্লামের বংশের সেই শাখার সাথে সম্পৃক্ত যা তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র হযরত ইসমাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এসেছে। সে বংশের লোকেরা বনি ইসরাইল নামে পরিচিত ছিল। এক কথায় বলা যায়, নবী ইসমাইল আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বংশ থেকে আল্লাহ কেনানকে পাঠিয়েছেন। কেনান থেকে কুরাইশকে। আর কুরাইশ থেকে বনি হাশেমকে। এবং বনি হাশেম থেকেই নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিশেষভাবে মনোনীত করেছেন।
প্রিয় বন্ধুরা! প্রিয় নবী আনীত সব কিছুর প্রতি আমাদের পূর্ণ বিশ্বাস ঈমানের প্রথম শর্ত। মুসলমান হতে হলে প্রিয় নবীকে বিশ্বাস করতেই হবে। তিনি আল্লাহর বান্দা ও নবী- এ বিশ্বাস হৃদয়ে পুষতে হবে। রাসূলের প্রতি ভালোবাসা আমাদের ঈমানের অংশ। তিনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ। আল্লাহ তাআলা রাসূলকে মানবীয় সব গুণাবলী দিয়ে পাঠিয়েছেন। অসংখ্য গুণ দিয়ে রাসূলকে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করেছেন। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা, কাজ, অনুমতি, অনুমোদন সবই আমাদের জন্য আইডল। পালনীয়। তিনি উম্মাহর শিক্ষক। এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেছেন- ‘অবশ্যই আল্লাহ মুমিনদের উপর অনুগ্রহ করেছেন। যখন তিনি তাদের মধ্য থেকে তাদের জন্য রাসূল পাঠিয়েছেন, সে তাদের কাছে তাঁর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে এবং তাদের পরিশুদ্ধ করে আর তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেয়। যদিও তারা এর আগে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে ছিল।’ (সুরা ইমরান: ১৬৪)
তিনি পথহারা এ উম্মাহর পিঠে হাত বুলানো দাঈ। যেমনটি স্রষ্টা নিজেই বলেছেন- ‘হে রাসূল, তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার নিকট যা নাযিল করা হয়েছে, তা পৌঁছে দাও।’ (সুরা মায়েদা: ৬৭) তিনি এতিম এ উম্মতের উত্তম আদর্শ। পবিত্র কুরআনে যেমন উল্লিখিত আছে-অবশ্যই রাসূলুল¬াহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে।’ (সুরা আহযাব:২১)
এভাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসংখ্য গুণ আর মর্যাদার অধিকারী। তিনি সৃষ্ঠির শ্রেষ্ঠ।
প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই বলছেন-আমি কেয়ামতের দিন সকলের নেতা হবো। আমার হাতে হামদের পতাকা থাকবে। সেদিন কোনো নবীই আমার পতাকা ব্যতীত অন্য কোথাও থাকবে না। (সুনানে তিরমিযি)
বন্ধুরা! নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নবী। আমাদের নবী। সৃষ্টির বিস্ময়। কুরআনে বর্ণিত রাসূলের সব গুণাবলী ও শ্রেষ্ঠত্বে বিশ্বাসই আমাদের ইমানের মূলমন্ত্র। রাসূলের আদর্শে আদর্শময় হোক আমাদের ইমান। জীবন। প্রতিটি কাজ।