সুন্দরবনে আপনমনে

সুন্দরবনে আপনমনে

১.
‘ছুন্দর বনভি বহুত ছুন্দর। রয়েলবেংগল টাইগারওভি বহুত ছুন্দর। লেকিন, বাঘ মামাজির হুমকে পড়লে খেইলভি খতম। উদ্দিছ কইরা ছুন্দরবনে নাইমেন, হুগনার উপরে কুমিরওভি আছে, লেঙ্গুরের বাড়ি খাইলে কইলাম হালুয়া টাইট। পোছরা খাতায়ভি নাম উইঠা যাইবো….’
‘ক্যালা? হালুয়া টাইট অইবো ক্যালা? আমগো লগে ঠ্যাং নাই? লৌড় পাইরা ফুইটা যামুগা….’
হ্যাঁ, আমার এক ‘ঢাকাইয়া কুট্টি’ বন্ধুর সাথে সুন্দরবন রওনার আগে এমন বাৎচিৎ-ই হয়েছিল। কিন্তু মনে মনে একটা ভয়ও যে আমাকে গাট্টা মারেনি, তা কিন্তু নয়। তাই বলে সুন্দরবন ভ্রমণের ইচ্ছেটা মন থেকে পালাতে পারেনি। এসব রোমাঞ্চকর ভ্রমণের ব্যাপারে আমার ভাবসাবই আলাদা। বন্ধুমহলে তাই বেশ ঘটা করে এলান দিয়েছিলাম- ‘আমি বাঘ শিকার যাইমু, পোটলা লইয়া রেডি হইলাম আমি আর মামু…।
তবে এসব ব্যাপারে যাকে বাঘের মতো ভয় পাই তার কাছে ঘটনাটি ২০০৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ফাঁস হয়ে গেল। অমনি আমার মা-জননী মানে বড়কন্যা মৌরিন ফারজানা বাঘিনীর রূপ নিয়ে সামনে এসে বললো- ‘যাও আব্বু, একাই সুন্দরবনে যাও। আমাদের কলেজ থেকে আমরা যখন কুয়াকাটা বেড়াতে যাবো- তখন তুমিও কিন্তু বাদ।’
যাব্-বাবা মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি! অভিমানের ওংকারে এক চান্সেই অনুমতি দিয়ে দিলো!! আমিও চান্সে বললাম- তাহলে আমার টুপিটি থেকে জুতোটি পর্যন্ত গুছিয়ে দেবার দায়িত্বও কিন্তু আপনার।
অমনি পর্দার আড়াল থেকে বেগমসাহেবা বেরিয়ে এসে বললেন- বাহ্বা, বাপ-মেয়ের নাটকটা ভালো জমেছে। নাও ফাঁড়া তো কাটলো, এবার স্বাধীনভাবে যাবার প্রস্তুতি নাও।
একফাঁকে বলে রাখি, আমাদের এই সফরটি ছিলো মোটামুটি পাঁচদিনের।

২.
বিশাল এক অভিযাত্রী দলের সাথে যাচ্ছি সুন্দরবন সফরে। আহাঃ কী আনন্দ আকাশে বাতাসে….। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ বিকেল ৪টা ৭ মিনিটে আমার আরামবাগের বাসা থেকে প্রিয়বন্ধু প্রফেসর ড. শহীদুল্লাহ আনসারী ও তার পুত্র আছিফসহ বেরিয়ে একটি সিএনজি করে সোজা পৌঁছে গেলাম মোহাম্মদপুর। যেখানে অভিযাত্রীরা একত্রিত হয়েছেন। সেখানে আমার এক সিনিয়র ভাইকে পেয়ে অভূতপূর্ব নয়- রিতিমত ‘অপূর্বভূত’ শিহরণ জাগলো মনে। কানে কানে বলে রাখি, এই শব্দটি আসলে তিনিই আমাকে শিখিয়েছিলেন!
আরও অবাক হবার পালা! এই সফরে আমার ২৪ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া বন্ধু বিশিষ্ট ছড়াকার শফিকুর রহমান রঞ্জুর সাথে মোলাকাত হয়ে গেলো। আনন্দে বন্ধুকে বুকে জড়িয়ে ধরলাম। মহান রাব্বুল আলামিনের শুকরিয়া আদায় করলাম; সুন্দরবন সফর উপলক্ষে ২৪ বছর পর বন্ধুকে কাছে পেয়ে। বাদ সালাতুল মাগরিব দুটি লাক্সারি বাসের দুই নম্বর বাসে সিট মিললো আমার ও ড. আনসারীর। রঞ্জু চলে গেলো এক নম্বর বাসে। তবে আমাদের সাথে রইলেন আরেক মজার মানুষ প্রখ্যাত ফিল্মমেকার ও চলচ্চিত্র পরিচালক সেলিম ভাই।
কাঁটায় কাঁটায় রাত ৭টা ৩৫মিনিটে বাস ছুটলো আরিচার দিকে। কিছু পথ যাবার পর আমাদের বাস এক নম্বর বাসকে পাশ কাটিয়ে সামনে যেতেই এই বাসের অনেকেই সোল্লাসে বললেন- হো-হো-হো আমরাই এক নম্বর। দেখে মনে হলো আজকে সবার বয়স কমে টসটসে কিশোর-তরুণ হয়ে উঠেছেন! বাসে সান্ধ্যকালীন নাস্তা হিসেবে স্যান্ডুইচ পরিবেশনে মনটা আরও চনমনে হয়ে উঠলো।
রাত ৯টা ২৪ মিনিটে আমরা মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছে ফেরিতে রওনা হলাম দৌলতদিয়ার উদ্দেশে। জামাতে এশার কছর আদায় হলো ফেরির নির্ধারিত স্থানে। রাত সাড়ে ১০টায় বাস ফরিদপুর পৌঁছুলে সেখান থেকে একজন নামকরা কণ্ঠশিল্পী আমাদের সাথে যোগ হলে তাকে নিয়ে মোট পর্যটকের সংখ্যা হলো ৯০জন। রাত ১১টা ১৬ মিনিটে রাতের খাওয়ার জন্য বাস থামলো মাগুরা সার্কিট হাউসে। এখানে নেমেই বাগানের মাটিতে পা রেখে এক ভাইকে বললাম- এই যে মাগুরার মাটিতে পাড়া দিয়ে গেলাম।
তিনি গোল্লা গোল্লা চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন- ‘ইহাকেই বলা হয় কবি!’ একথায় আমাকে নিয়ে সবার সেকি উচ্ছ্বাস!!
রাত ১২টা ৪৮ মিনিটে রওনা হয়ে বাস দুটি যশোর পেরিয়ে খুলনার দিকে ছুটছে। জানালা গলে আকাশে দৃষ্টি মেলে দেখি চমৎকার থালার মতো পূর্ণিমার চাঁদ। নিদারুন লাগছে তখন ওই বসুধা-নন্দিনীকে।

৩.
রাত ২টা ৩২ মিনিটে খুলনা লঞ্চ টার্মিনালে পৌঁছে আমাদের জন্য রিজার্ভ করে রাখা ‘এমভি লোপা’কে দেখে তো তাজ্জব! লঞ্চটি এতোটা দৃষ্টিনন্দন যে, দেখে মনে হচ্ছিল একটা সি-প্লেন যেন পানিতে ভাসছে। ড. আনসারীকে কৌতুকছলে বললাম- আমরা তো চাঁদে যাবো না, তাহলে এই নভোযান কেন?
তিনিও দুষ্টুমি করে বললেন- ওটা সুন্দরবন শাটলযান!
আমরা তাতে আরোহণ করে চমৎকার পিরপাটি বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। অমনি মশককুল বি-৫২ জঙ্গিবিমানের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে তখনকার মার্কিনসন্ত্রাসী কুত্তা বুশের মতো হুল ফুটাতে লাগলো। হঠাৎ বাম হাতের ডানায় তাকিয়ে দেখি- ‘হায়রে মশা, পেট তো না তার তাক্ ধিনা ধিন্ করে!’ অমনি ডান হাতটা ক্রিকেটার শোয়েবীয় গতিতে বলিং-এর কায়দায় উঠে গেলো উপড়ে। তারপর ব্যাটে-বলে সংযোগ, সাথে সাথে ছক্কা!! তাকিয়ে দেখি- মশক পেয়েছে অক্কা!!! অবশ্য হাতের তালু ততক্ষণে লালে লাল খুনিয়া।
ঘুম পালিয়ে গেলো ভেস্তে। শুরু হয়ে গেলো- সেঞ্চুরি হাঁকানোর খেলা। সেই দুষ্টমিতে ছেলেবেলার মতো ব্যাটে বলে টপাটপ, মশা মারি ঝপাঝপ। এরই মধ্যে এ্যারোসোল স্প্রে করায় ফজরের আগ পর্যন্ত এক সেঞ্চুরি উনিশ রান হাঁকিয়েছি! তার মানে ১১৯ মশা কুপোকাত!
সালাতুল ফজর পড়ে আর বিছানায় মন টিকলো না। চলে গেলাম ছাদে। সাথে সাথে স্নিগ্ধ শীতল হাওয়া মন-প্রাণ আবিষ্ট করে ফেললো। দূরে দৃষ্টি ছড়িয়ে দেখতে পেলাম মংলা সমুদ্র বন্দরের সারিবদ্ধ ক্রেনগুলোকে। মনটা হু হু করে কেঁদে উঠলো। মংলা পোর্টে একটি জার্টিন অথবা কর্গোও নেই। ক্রেনগুলো কেবল কালেরস্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে একটি জাহাজ নোঙর করে আছে। দেখলেই বোঝা যায় ‘আনলোড’। চারদিকে শুনশান অথৈ পানি। কাপ্তান জানালেন, এখানে প্রায় বিশ কিলোমিটার জুড়ে ডুবে আছে অসংখ্য বিদেশী জাহাজ। ওসবের ধাক্কা খেয়ে তলা ফেটে যাবার ভয়ে এখন আর এ বন্দরে দেশী-বিদেশী জাহাজ আসে না। ফলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারি মংলা বন্দর আজ অচল।
দেখতে দেখতে ঘোলা পানির নদী ‘পশুর নদী’তে চলে এসেছে লঞ্চ। অদূরেই সুন্দরবন। আমাদের টিমের ভিডিওতে ধারণ করা হচ্ছে ‘লাইভ’। এরই মধ্যে খাঁটি খেজুর রসে ভেজানো সাঁজের পিঠা দিয়ে শেষ হলো নাস্তার পালা। লঞ্চ ছুটছে দুকুল ঘেঁষে গৌরবের সাথে দাঁড়িয়ে থাকা সুন্দরবনের মধ্যকার নদী পথে।

৪.
লঞ্চের ছাদে দাঁড়িয়ে দুটিচোখ খুলে অন্তরভরে দেখছি মন-প্রাণ হরণ করা দৃশ্যাবলী। আহা! সুন্দরবন!! প্রকৃতির এক অপরূপ লীলাভূমি। মহান রাব্বুল আলামিন সুনিপুণ কুদরতী হাতে সাজিয়েছেন এই বনভূমিকে। মহান রাব্বানার এই নয়নাভিরাম সবুজ-শ্যামল বনের দৃশ্যাবলী আর প্রাকৃতিক সম্পদের সীমানাবিহীন বনরাজির সৌন্দর্যের শেষ নেই। প্রকৃতপক্ষে সুন্দরবন হলো- ৫৫টি দ্বীপের সমষ্টি। এরই মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে ৩৪টি নদী আর প্রায় ৩০০ খাল। তাই কোনো দ্বীপের সাথে অপর দ্বীপের স্থল বা সড়ক সংযোগ নেই। প্রতিটি দ্বীপই একেকটি বনভূমি।
১৯৯৮ সালে পৃথিবীর বৃহত্তর সৌন্দর্যময় ম্যানগ্রোভ হিসেবে জাতি সংঘের ইউনেস্কো সুন্দরবনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের বিরাট এলাকা নিয়ে সুন্দরবন বিস্তৃত। যার আয়তন ১০ হাজার ২৮১ বর্গকিলোমিটার। তার মাধ্যে বাংলাদেশের অংশ ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার। বাকি ৪ হাজার ২৬৪ বর্গকিলোমিটার ভারতের। বাংলাদেশের অংশ বঙ্গোপসাগরের কূল ঘেঁষে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বাগেরহাট ও বরগুনা এই ৭টি জেলা নিয়ে গড়ে উঠেছে। এই সুন্দরবনের পূর্ব সীমানায় রায়মঙ্গল ও হরিণঘাটা নদী। পশ্চিমে দুই নদীর মোহনায় সমুদ্র থেকে উজানে কয়েক মাইল পর্যন্ত বাংলাদেশের সীমানা। এই মোহনাতেই তালপট্টি দ্বীপ অবস্থিত।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, অষ্টাদশ শতাব্দির শুরুতে সুন্দরবনের আয়তন বর্তমানের দ্বিগুন ছিলো। বনের ওপর মানুষের দখলদারিত্ব, মানব-বসতির বিস্তার ও নদীর ভাঙনের কারণে এর আকার ছোট হয়েগেছে। ১৮২৮ সালে বৃটিশরা সুন্দরবন দখল করে এবং ১৮৭৬ সালে তারা সুন্দরবনকে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করে। পরে ১৮৭৯ সালে সুন্দরবনের দায়িত্ব বনবিভাগের ওপর দেয়। ১৯৭১ সালে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশ সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন বাংলাদেশের অধীনে আসে।
সুন্দরবনে গিয়ে জানাগেলো- সুন্দরবন নিয়ে এখন বিদেশীদের ভয়াল চক্রান্ত চলছে। জাতি সংঘের নাম ভাঙিয়ে ইউএনডিপি’র অর্থায়নে ভিনদেশীরা পর্যায়ক্রমে ম্যানগ্রোভ সংরক্ষণ, বাঘ ও বন্যপশু শুমারী এবং অভয়ারণ্য গড়ার নামে ইঙ্গ-মার্কিন ইয়াংকিরা সুন্দরবনকে নিয়ে নানাবিধ খেলায় মেতে উঠেছে। তারা উড়ে এসে জুড়ে বসে বাংলাদেশকে নানাবিধ পরামর্শ দিয়ে চলেছে। এলাকাবাসী অভিযোগ করেছে, ইয়াংকিরা উপদেষ্টার মুখোশ পরে বাংলাদেশীদের সুন্দরবন থেকে স্বাভাবিকভাবে গাছ কাটতে দেয় না, মধু সংগ্রহ করতে দেয় না, মাছও ধরতে দেয় না। যখন যেমন খুশি তেমন নীতি চাপিয়ে দেয়। এমনকি বাংলাদেশের ফরেস্টার রেঞ্জারদের ওপরও খবরদারি করে।

৫.
সুন্দরবনের শত শত প্রকার গাছের মাঝে এক প্রকার গাছের নাম সুন্দরী। এই গাছের সংখ্যা এত বেশি যে, ধারণা করা হয় এই গাছের জন্যই বিশ্ববিখ্যাত এই বনের নাম হয়েছে সুন্দরবন। তাছাড়া আরও একটা কথা চালু আছে, সমুদ্রের নিকটবর্তী বন বলে একে লিটোরাল ফরেস্ট বা ‘সুমুন্দরবন’ বলা হতো। পরে তা থেকেই নাকি সুন্দরবন নামের উৎপত্তি হয়েছে।
বাওয়ালীরা গভীর বনে গিয়ে সুন্দরী গাছ কেটে, ডালপালা ছেঁটে স্তুপাকারে রাখে। তখন কাঁচা কাঠের যে লাল-গোলাপী রং বের হয় তা আশ্চর্যরকম সুন্দর দেখায়।
সে যা-ই হোক, সমগ্র সুন্দরবনের উপরাংশের মাটি কিন্তু কর্দমাক্ত। কোথাও হাঁটু অবধি কাদা। মাটির নিচে কোথাও কোনো শিলা নেই। পনেরো-বিশ ফুট পর্যন্ত শুধু কাদা। তারপর বালির স্তর। তবে সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জে প্রাচীন দালান-কোঠার ধ্বংসাবশেষ, দিঘি-পুকুর ইত্যাদির সন্ধান মিলেছে। এছাড়া মাটির নিচে খনন চালিয়ে কিছু সাধারণ বাড়ি-ঘরের চিহ্নও পাওয়া গেছে।
এই বনে চব্বিশঘণ্টায় দু’বার করে জোয়ার-ভাটা হয়। জোয়ারের সময় পুরো বন দুই-তিনফুট সমুদ্রের লবণাক্ত পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে এখানে এমন গাছপালাই জন্মায় যেগুলো লবণাক্ততা ও জলমগ্নতার মাঝে বেঁচে থাকতে পারে। এ কারণেই সুন্দরবনকে বলা হয়ে থাকে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট। সারা পৃথিবীর আর কোথাও এমন বন নেই। সাগরের জোয়ার-ভাটা বিধৌত এই বনে গাছের শিকড়েরও রয়েছে বিশেষ বৈশিষ্ট্য। কোনোটির শিকড় গুচ্ছ ধরণের, কোনো কোনোটির মূল থেকে অগণিত শ্বাসমূল বা শুলা বের হয়। কোনো কোনো প্রজাতির ফল গাছে থাকতেই তা অঙ্কুরিত হয়। এই ফল মাটিতে পড়লেই নরোম মাটিতে গেঁথে যায় এবং তার থেকে চারা গজায়।
এই বনের বনজসম্পদ হলো- সুন্দরী, গড়ান, গেওয়া, গামারী, গর্জন, কেওড়া, কেরাছিন, বাইন, গোলপাতা, আমুড়, সিংড়া, হেতাল, তাল, তমাল, নারিকেল, ঝানা ইত্যাদি গাছ। আর বন্যপ্রাণীর মাঝে আছে বিশ্বখ্যাত রয়েলবেঙ্গল টাইগার, চিত্রল হরিণ, বানর, মহিষ, বনগরু, গন্ডার, শুকর, কুমির, শুশুক, ঘরিয়াল, বিশাল আকৃতির অজগর সহ নানাজাতের সাপ এবং সাড়শ, সাদাবক, তোতা, মাছরাঙা, ময়না, টিয়া, মদনটাগ, ধনেশ, কালিম, ঘুঘু, লালচিল, ভুবনচিল ও শকুনসহ প্রায় তিনশত প্রকার পাখি। এছাড়া নদীগুলোতে ভেটকি, পোয়া, বাঘাইড়, চেউয়া, চিংড়ি, বাইম, কুচেসহ শত শত প্রকার মাছ ও বিভিন্ন জাতের কাঁকড়া রয়েছে। তন্মধ্যে সুন্দরবনের লালকাঁকড়া সবচেয়ে আকর্ষণীয়। তাছাড়া এখানের গাছে গাছে আছে হাজার হাজার মৌচাক। এসব মৌচাক থেকে লক্ষ লক্ষ লিটার খাঁটি মধুসংগ্রহ করে কয়েক হাজার মানুষ। তারা ‘বাওয়ালী’ বলে পরিচিত। তাছাড়া কাঠকাটা, মাছধরা ও গোলপাতা সংগ্রহের জন্য গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ সুন্দরবনে কাজ করে।

৬.
সুন্দরবনে ইচ্ছে করলেই যে কেউ প্রবেশ করতে পারে না। সুন্দরবন সফর করতে হলে আগেই বন-অধিদফতরের অনুমতি নিতে হয়। বিনা অনুমতিতে ঢুকলে তার জন্য বিভিন্ন মেয়াদের সাজা ভোগ করতে হয় এবং জরিমানা দিতে হয়। প্রতিদিন হাজার হাজার ভাসমান মানুষ বনে কাজ করে। তারা ‘পাস’ বা অনুমতিপত্র নিয়ে প্রবেশ করে।
সুন্দরবনে প্রবেশের জন্য সরকার অনুমোদিত খুলনাতে দুটিমাত্র পথ রয়েছে। একটি মংলা বন্দর থেকে শেওলা নদীপথে চাঁদপাই এলাকা। আরেকটি হচ্ছে শরনখোলা দিয়ে বনে প্রবেশ। এছাড়া সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ ফরেস্ট অফিসের অনুমতি নিয়েও বনে প্রবেশের ব্যবস্থা আছে।
সুন্দরবন সমুদ্রতীরবর্তী হওয়ায় এবং অসংখ্য নদী ও খাল বিধৌত বলে এই বনের আবহাওয়া নাতিশীতোষ্ণ। তাই শীতকালেও প্রচণ্ড শীত অনুভূত হয় না। আবার গরমকালেও প্রচণ্ড গরম থাকে না। প্রতিবছর সুন্দরবনে গড়ে প্রায় ৭০ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হয়। তবে সুন্দরবেনর সবগুলো নদীর পানি লোনা বা লবণাক্ত। তাই পর্যটকদের ড্রামভর্তি সুমিষ্ট পানি নিয়ে বনে প্রবেশ করতে হয়।
সুন্দরবনের প্রত্যেকটি ফরেস্টঅফিস এলাকায় সরকারি পুকুর খনন করা আছে। সেখান থেকে কর্মকর্তা, কর্মচারি, জেলে ও বাওয়ালীরা মিঠা পানি সংগ্রহ করে। এসব পুকুরের পানি কিন্তু কিছুটা লবণাক্ত এবং ভারি। তাই হঠাৎ কোনো পর্যটক এই পানি পান করলে তেমন স্বাদ পাবে না, তৃপ্তিও পাবে না।
অন্তহীন প্রকৃতি যেন তার অঢেল শোভা ঢেলে দিয়েছে এই বনে। তবে সুন্দরবনে অপরূপ সৌন্দর্য্যর পায়ে পায়ে মিশে আছে মৃত্যুর বিভিষিকা। বনের গাছপালা যেমন সুন্দর তেমনি এখানের জীব-জন্তুগুলোও আশ্চর্য সুন্দর। তার মাঝে প্রধান দুটো প্রাণী হলো বাঘ এবং হরিণ। সবচেয়ে সুন্দর ও ভয়ংকর জন্তুটির নাম রয়েলবেঙ্গল টাইগার। সারা দুনিয়াবাসীর কাছে এই বাঘ একনামে মশহুর। রয়েলবেঙ্গল টাইগার আমাদের জাতীয়প্রতীক এবং জাতীয়পশু। সাদা, কালো আর হলুদের মিশেলে ডোরাকাটা এই বাঘটির চেহারা যেমন রাজকীয় তেমনি তার বিশালতা। ওরা নয়ফুট থেকে বারোফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। সুন্দরবনে বর্তমানে সাড়েচারশ’ বাঘ আছে বলে শুমারিতে বলা হয়েছে।
দ্বিতীয় আকর্ষণীয় প্রাণীটির নাম চিত্রল হরিণ। একে স্বর্ণমৃগ, সোনার হরিণ, চিত্রল হরিণ এবং চিতল হরিণ নামেও ডাকা হয়। এই হরিণ খুবই ভীরু কিন্তু প্রচণ্ড দ্রুতগামী। পৃথিবীতে এই হরিণের সমতুল্য আর কোনো হরিণ নেই। সুন্দরবনে বর্তমানে প্রায় একলাখ হরিণ আছে বলে ধারনা করা হয়।
সুন্দরবনে পর্যটন করার মতো বিখ্যাত স্পটগুলো হচ্ছে- কটকা, হিরনপয়েন্ট ও দুবলার চর। হিরন পয়েন্ট থেকে সরাসরি সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় দেখার জন্য হাজার হাজার দেশী-বিদেশী পর্যটক সেখানে ভীড় জমায়। দুবলারচরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শুটকিপল্লি অবস্থিত। এখানের তৃণভূমিতে হরিণের পাল নির্ভয়ে বিচরণ করে।

৭.
তো, দুপুর একটায় কটকা স্পটের কাছাকাছি এসে আমরা লঞ্চের পাম্পে তোলা লোনা পানিতে গোসল সেরে সালাতুল জোহর আদায় ও ঝটপট দুপুরের খাবার সেরে নিলাম। বিকেল সাড়ে তিনটায় লঞ্চ কটকা জামতলা রেঞ্জে ভিড়লো। আমরা রোমাঞ্চকর উৎসাহ নিয়ে দল বেঁধে নেমে পড়লাম বনে। অনেকেই হুড়মুড় করে উঠে পড়লেন পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে। ওখান থেকে কোনো পশুপাখি নজরে এলো না। তাই তড়তড়িয়ে নেমে বনরক্ষীর সেকেলে বন্দুকের ওপর ভর করে বীরদর্পে এগিয়ে চললাম সামনের দিকে। বলে রাখি, বনে চলার একটা নিয়ম আছে- বনে পড়ে থাকা গাছের ডাল অথবা শক্ত-পোক্ত লাঠি হাতে নিয়ে দলবেঁধে চলা। এবং কখনোই দলছুট হওয়া যাবে না।
দলের ভেতর থেকে একজন জানালেন- প্রতি বৃহস্পতিবার নাকি গভীররাতে বনের ভেতর থেকে আল্লাহু আল্লাহু জিকির শোনা যায়!
তাই কেউ নাকি বনের মাটিতে সরাসরি পায়খানা-প্রস্রাব করে না!! প্রয়োজনে শুকনো পাতা বিছিয়ে কাজ সারে।
একথা শুনে তো আমরা অবাক। অমনি হঠাৎ চিৎকার আর হৈ-হুল্লোরে পিলে চমকে গেলো। চোখের পলকে বনের ভেতর থেকে ছুটে এলো একপাল পশু! ওদের অধিকাংশই হাফপ্যান্ট পরা, কাদামাখা জামা। কারোবা উদোম শরীর। সবার মুখে বিকট ও বিরক্তিকর চিৎকার। ওরা আমাদের কাছে এসে জ্ঞান দিতে শুরু করলো- ‘সাবধানে যান মিয়ারা। সামনে কিন্তু বাঘ দেখা গেছে। একটুর লাইগা জানে বাঁইচা আইলাম।’
আমরা মুচকি হেসে বললাম- তাই বলে এভাবে জানোয়ারের মতো চিৎকার করে মানুষের পিলে চমকে দিতে হয়?
ওরা কথা না বাড়িয়ে আগের মতো চিৎকার করতে করতে দ্রুত অন্য দিকে চলে গেল। তখন আমাদের হাসি আর দেখে কে!
আমরা এগিয়ে যেতেই সামনে পেলাম বিশাল জাম বাগান। একেকটা গাছ বিশাল বিশাল। গাছতলাতে বনবিভাগের লোকেরা বেঞ্চি বানিয়ে রেখেছে। সেখানে সামান্য জিরিয়ে বন পেরিয়ে চলে এলাম এক অবাক জগতে! হ্যাঁ, আমাদের সামনে বিস্তৃত সমুদ্র সৈকত। সমুদ্রের ঢেউ তুমুল গর্জন করে আছড়ে পড়ছে সৈকতের বেলাভূমিতে। আনন্দে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতেই কেউ কেউ ঝাঁপিয়ে পড়লো সাগরের বুকে। ওদিকে কখন যে সূর্যমিয়া টুপপুৎ যেতে বসেছে কেউই খেয়াল করিনি। বনরক্ষীর তাড়া খেয়ে সচেতন হলাম। সে বলছে- জলদি ফেরত চলেন। নইলে ভীষণ বিপদ আছে।
… লে হালুয়া! আবার ছুট, ছুট, ছুট। হঠাৎ সেলিমভাই চিৎকার করে উঠলেন- হরিণ, হরিণ।
সামনে তাকিয়ে দেখি, দু-তিনটি হরিণ দ্রুতলয়ে আড়াল হয়ে গেলো পাশের ঝোঁপে। আমরা পায়ে পায়ে এগিয়ে এলাম হরিণের জন্য তৈরি করা মিঠাপানির পুকুরপাড়ে। দেখলাম হাজার হাজার হরিণের পায়ে ছাপ আর লাখ লাখ লেদি। ওগুলো দেখতে ছাগলের বিষ্ঠার মতো। অন্ধকার ঘনাবার আগেই দ্রুত চলে এলাম জামতলা রেঞ্জের কাঠের জেটিতে।
কিন্তু হায় লঞ্চ তো নেই! শুনলাম ভাটিতে লঞ্চ আটকে যাবার ভয়ে ‘ছিটেকটকা’ নদীর মাঝখানে নিয়ে লঞ্চ নোঙর করা হয়েছে। এদিকে সালাতুল আছর যায় যায়…। বন্দুকের পাহারার মাঝে তাড়াতাড়ি সুন্দরবনের জমিনে সালাতের জামাত হয়ে গেলো।

৮.
চারদিকেই বাঘের ভয়। আমরা ভয়ের তোড়ে বলতে গেলে পায়ে পায়ে টক্কর খাচ্ছি। এরই মধ্যে বড় নৌকায় তুলে আমাদের পালাকরে লঞ্চে তোলা হলো প্রায় এক কিলোমিটার দূরে নিয়ে। লঞ্চে এসেই মাগরিবের জামাত সেরে সান্ধ্যকালীন চা-নাস্তা সারা হলো। তারপরই আমাদের নামানো হলো নিয়ে কটকা মেইন ফরেস্ট রেঞ্জে। সে আরেক থ্রিলিং পয়েন্ট। চারদিকে নিথর অন্ধকার। আগেই বলা হয়েছে- টু শব্দটিও করা যাবে না। নদীর কিনার ঘেঁষে গড়ে ওঠা হালকা বনের নিকোষিত অন্ধকার। যেখানে এতটুকু সমতল, সেখানেই হরিণরা রাতভর ঘুমায়। দলে দলে। পালে পালে। সে সুবাদে বাঘবাহাদুরও কখনও কখনও ঝাঁপিয়ে পড়েন হরিণের পালে।
একথা শুনেই মাথাটা ঝিম ঝিম করে উঠলো। এদিকে বেশ শীতও লাগছে। বনকর্মকর্তা আর বন্দুকধারিদের আশ্বাসে আমরা খানিকটা সহস করে বনের দিকে এগিয়ে গেলাম। পেছন থেকে বনরক্ষী ফিসফিসিয়ে সাবধান করে দিলো- ‘আর সামনে যাবেন না। বিপদ হতে পারে।’ পরে সে বড়টর্চের আলো ফোকাস করে কতগুলো হরিণ দেখিয়ে জানালো- একটু আগে একটা অসভ্য গ্রুপ এসে হৈ চৈ করে হরিণ তাড়িয়েছে। নইলে আপনারা এখানে দু-তিন হাজার হরিণ দেখতে পেতেন।
আমরা তাড়াতাড়ি লঞ্চে ফিরে এলাম। সালাতুল এশা এবং রাতের খাবার শেষে রাত আটটায় শুরু হলো জম্পেস সাংস্কৃতিক আড্ডা। হামদ, নাত, ইসলামী ও দেশাত্মবোধক গান, ছড়া, কবিতা, কৌতুক, অভিনয় আর মুখরোচক রম্যভাষণ! বেশ জমলো আড্ডাটি।
দলনেতা জানালেন- রাতে সবার ঘুমনো চলবে না। কারণ এখানে প্রায়ই ডাকাত হানা দিয়ে পর্যটকদের সবকিছু লুটে নেয়। তাই সশস্ত্র আনসারদের সাথে আমাদেরও পালাক্রমে পাহারায় থাকতে হবে।
রাত ২টা থেকে ভোর পাঁচটার পাহারা দলে আমি। তবে আমার ডিউটি ছাদে। হাতে টর্চ আর সামান্য একটা লাঠি ও বাঁশি মুখে একান্ত একা! তবে বিনা কারণে বাঁশি বাজানো চলবে না। চারপাশে ঝিমধরা অন্ধকার। হঠাৎ পশ্চিম দিগন্তে একটা উজ্জ্বল আলো দেখতে পেলাম। ছুটে চলা তারার মতো কেবল উপরেই উঠছে। একসময় আমার মাথার উপরের আকাশ পেরিয়ে পূর্ব দিগন্তে নিচের দিকে নামতে নামতে মিলিয়ে গেল। রাতের আকাশে কত-শতবার বিমান চলতে দেখেছি, কিন্তু এমনটি জীবনে দেখিনি বলে বেশ ভালো লাগলো।
রাত ৩টা। চারদিকে থমথমে নিস্তব্ধতা আর ঘুটঘুটে অন্ধকার। এ সময় রাব্বুল আলামিনের সান্নিধ্যের সুযোগ হাতছাড়া করা চলে না। মেজমেয়ে ফারিহাকে অসুস্থ দেখে এসেছি। আল্লাহর কাছে কেঁদে কেঁদে সব জানালাম।
রাত ৪টা। ‘গভীর রাতে বনে জিকিরের শব্দ শোনা যায়’ -কথাটি মনে পড়তেই জ্বিনদের কথা ভাবলাম। আহা! এখন যদি কোনো জ্বিন বা পরী আমার সামনে আসতো! তাদের সাথে প্রাণখুলে কথা বলতাম। -না, কেউই এলা না।
ঘড়ির কাঁটা ৪টা ৫০ মিনিটে পৌঁছতেই ছাদ থেকে নেমে- ‘আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম’ বলে ঘুমন্তদের জাগিয়ে দিলাম। আমার মতো পাহারায় নিযুক্ত বিভিন্ন স্পটের বন্ধুরাও এসে ফজরের সালাতে সামিল হলেন।

৯.
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৪। ফজরের সালাত শেষে সূর্যোদয়ের আগেই আমরা আবার খুব কাছথেকে হরিণ দেখতে ছুটলাম কটকা অভয়ারণ্যে। দু-চারজনার অতি উৎসাহে ছুটাছুটির কারণে হরিণ পালিয়ে গেলো বনের মাঝে। সবার তো ভীষণ মন খারাপ। তাই দেখে বনকর্মীরা গাছের উপরে উঠে কৌশলে মোটা ডালে আঘাত করতে লাগলো। আর পাতাসহ দু-চারটা চিকন চিকন ছোট ডাল মাটিতে ফেলতে শুরু করলো। শব্দ শুনে মনে হলো, তারা গাছের ডাল কাটছে। অমনি সবাইকে অবাক করে ঝাঁকে ঝাঁকে হরিণ চলে এলো আমাদের কাছে। মহাখুশিতে সবাই হরিণের সাথে ছবি তুললাম। কেউ কেউ শখ করে হরিণদের নিজের হাতে কেওড়া গাছের পাতা খাওয়ালেন। আমি তন্ময় হয়ে হরিণের কাছাকাছি জমিনে পা ছড়িয়ে দিয়ে বসে গেলাম। অনেক্ষণ ধরে হরিণদের নির্ভয় আচরণগুলো দেখলাম। ক্যামেরা ইউনিট দীর্ঘসময় ধরে চলালো হরিণদের সাথে বিভিন্ন স্টাইলের ভিডিও শ্যুটিং।
এই সুযোগে আমি বসা থেকে উঠে হাঁটতে হাঁটতে সমুদ্র পাড়ের নিকটবর্তী বনে ঢুকে পড়লাম। সেখানে সুন্দরী আর গড়ান গাছের শেকড়ের যে অসাধারণ কারুকাজ দেখতে পেলাম, তাতে অভিভূত হতে হলো। তারপর বেলেভূমিতে কাঁকড়াদের চলাফেরার কারণে যে কারুকাজ দেখলাম, তার কাছে আমার শিল্পীসত্তা অবনত হতেই কৃতজ্ঞতার সাথে উচ্চারণ করলাম- ‘সুবহানাল্লাহ’।
পরে একজন বিশেষজ্ঞের কাছে জানলাম, বাঘ শত শত হরিণ মেরে খাওয়ার পরও কিভাবে হরিণের বংশ বৃদ্ধি পায়! তিনি বললেন- ‘এজন্য সুন্দরী, গড়ান, কেওড়া প্রভৃতি গাছের শ্বাসমূল খুবই সহায়ক। বাঘ যখন হরিণের পালকে তাড়া করে তখন হরিণছানারা শ্বাসমূলের ফাঁক ফোঁকরে এবং জটমূলের তলাতে আশ্রয় নেয়। তাছাড়া বাচ্চাদের দৌড়ের গতিও থাকে হরিণের চেয়ে দ্রুত! ফলে বাঘ আর ওদের ধরতে পারে না।’ একথা শুনেও বললাম- সুবহানাল্লাহ।
সকাল ৯টায় আমাদের হিরনপয়েন্ট অপারেশনে ছুটতে হবে। তাই সবাই ফিরে এলাম লঞ্চে…।
(আপাতত থামছি। সুযোগ হলে পরবর্তী রোমাঞ্চকর ঘটনাগুলো জানাবো আরেকদিন, কেমন!)।

Share on facebook
ফেইসবুক
Share on twitter
টুইটার

Leave a Comment

অন্যান্য