হাতছানিতে ডাকছে গাঁয়ের সবুজ
শামীম খান যুবরাজ
উড়ছে পাখি ফুটছে ফুল আর
ছুটছে বাতাস জোরে,
কোথায় গেলি ওরে।
শব্দ-শায়ান আয় দেখে যা
কোকিল ডাকে গাছে,
ফুলে ফুলে রংচঙা সব
প্রজাপতি নাচে।
ঘুড়ি নিয়ে আয় ছুটে আয় মাঠে
পালতোলা নাও নোঙর দিলো
ফেনী নদীর ঘাটে।
চল ছুটে যাই নদীর কাছে
ফুলের কাছে
প্রজাপতির কাছে,
দেখবো কটা ঘাই মেরে যায়
কাতলা-বোয়াল মাছে।
শুনবো কোকিল ডাকছে কোথায়
লুকিয়ে পাতার ফাঁকে,
দেখ না কেমন গাঁয়ের সবুজ
হাতছানিতে ডাকে।
ঈদ
ইসমত জাহান লিমা
ঈদ এসেছে ঈদ এসেছে
ভাসছে খুশির বান,
আপন নীড়ে ছুটছে সবাই
মনে নাড়ির টান।
ফিরছে সবাই গাঁয়ের পথে
ভরছে মায়ের কোল
সব বয়সী লোকের বুকে
তাই তো খুশির দোল।
বাচ্চারা সব হৈ-হুল্লোড়ে
সাজবে ঈদের সাজ,
ঈদের নামাজ পড়তে গিয়ে
ভেঙে যাবে লাজ।
ধনীরা সব হাসি মুখে
গরিবজনে করবে দান
এমন খুশি নিত্য নামুক
পাক ফিরিয়ে সবাই প্রাণ।
ফুটন্ত ফুল
টি এইচ মাহির
ফুলের হাসি শিশুর খুশি
আলো ছড়ায় কাননে,
শিশুরা সব ফুলের কুঁড়ি
আগামীর দিন বুননে।
নতুন আশা নতুন স্বপন
নতুন দিনের শপথে,
শিশুর বিকাশ ঘটবে তবে
থাকে যদি সুপথে।
নতুন কুঁড়ি ফুটবে ভোরে
ফুল ফুটুক অন্তরে,
শিশুরা সব এগিয়ে যাবে
সঠিক শিক্ষার মন্তরে।
নবী এলো
সাহেদ বিপ্লব
জাহিলে যুগে কে এলে তুমি আমাদের দিতে আলো,
তোমার কথা মেনে নিলে আমরা থাকবো ভালো।
সত্য নবী প্রাণের ছবি পৃথিবী আলোময়,
তোমার পথে হেঁটে চললে বিশ^ হবে জয়।
আলো ছড়ালে বিশ^জুড়ে হে আমাদের নবী,
কিয়ামতের ঐ কঠিন দিনে তোমাকে পাই যদি।
এমন আশায় ঐ পথে চলি কোরআনের পথ ধরে,
কোরআনের বাণী হৃদয় মাঝে সব সময় মনে পড়ে।
ছন্দকবি তোমার ছবি আঁকছে প্রেমের খাতায়,
তুমি আমার হৃদয় জুড়ে মনের গভীর পাতায়।
নবীর নামে যিকির করি আল কোরআনের বাণী পড়ি,
সরল সোজা পথটি ধরে আমার জীবন আলোয় গড়ি।
আমার ঘরে
ইয়াকুব আলী রণী
আমার ঘরে ঈদ এসেছে
পড়েছে খুশির ধুম,
কেনাকাটায় ব্যস্ত ভীষণ
দুই চোখে নেই ঘুম।
নতুন জামা নতুন জুতা
পরবো আমি ঈদে,
সব দুঃখিদের খাবার দেবো
মিটবে ওদের খিদে।
ঈদের দিন খাবো আমি
পোলাও পায়েস দধি,
ঈদের মতো সারা বছর
কাটতো সবার যদি।
থাকতো না তো রেষারেষি
ধনী-গরিব সমান,
ঈদের দিনটা দান করেছেন
আল্লাহর সুমহান।
ঈদের খুশি
সাইদুর রহমান খান
সবার মুখে একটি কথা
আসছে ঈদের দিন!
শেষ হয় না কৃতজ্ঞতা
মহান প্রভুর ঋণ।
সুখের হাসি জগৎ জুড়ে
আনলো ঈদের রীতি,
এই আশাতে ছোট্ট শিশু
পায় যেন সব প্রীতি।
ঈদ খুশিতে হৃদয় মাঝে
পুলকিত সব জনে!
যাক ছড়িয়ে সুখের রাশি
বৃদ্ধ-শিশুর মনে!
অভাবী কিশোর
শাজাহান কবীর শান্ত
কিশোর ছেলে মাথায় কাজের নিত্য থাকে চাপে
বর্ষা-শরত আলগা শীতে ঠকঠকাঠক কাঁপে।
খোলা আকাশ উল্টো হয়ে চেয়ে থাকে ঘাসে
নিঃস্ব চোখের বিশ্ব তখন কিশোর চোখে ভাসে।
ফাগুন ফাগুন রোদ্দুরে তার দেহের আগুন ঝরে
পিতল রঙের বিকেল হলে আর থাকে না ঘরে।
ছেঁড়া জামায় কিশোর যখন ময়লা কাগজ কুড়ায়
দেয় উঁকি দেয় সূর্য তখন দূর পাহাড়ের চূড়ায়।
রঙবেরঙের পোশাক পরে পথচারী চলে
এই ছেলেটির পোশাক দেখি অভাবীদের দলে।
খুুশিতে সব কত ছেলে ঈদের মাঠে ছোটে
তাকে রেখে কেমন করে নাস্তা গালে ওঠে?
ঈদের খুশি
ইব্রাহিম জুয়েল
বছর ঘুরে রোজা শেষে
বাঁকা চাঁদের হাসি,
নতুন দিনের আভাস নিয়ে
আমেজ রাশি রাশি।
ধনী গরিব দেখি তখন
এককাতারে সবে,
নামাজ শেষে দোয়াগুলো
কবুল করেন রবে।
ধনী গরিব সবার সাথে
করবে কোলাকুলি,
সবার মুখে থাকবে তখন
তৃপ্ত সুরের বুলি।
ঈদের খুশি যাক ছড়িয়ে
সব মানুষের তরে,
নতুন দিনের আভাস আসুক
সবার ঘরে ঘরে।
ঈদ
মুহাম্মদ আলম জাহাঙ্গীর
আজকে খুশির ঢল নেমেছে
ঢল নেমেছে ঢল,
খোকাখুকি আয় ছুটে সব
ঈদ গাঁয়ে চল্।
ঈদ গাঁ যেয়ে পড়বো নামাজ
সকল খোকার দল,
নামাজ পড়ে সারাটা দিন
করবো কোলাহল।
ঈদের দিনের মতো সবাই
থাকলে মিলেমিশে,
বারোমাসই সুখে রবো
দুখ হবে ভাই কিসে?
সমাজেতে বাস করি ভাই
ভেঙে ভেদাভেদ,
সাম্যবাদের নিয়ম শিখায়
মুসলমানের ঈদ।
পথশিশুর ঈদ
আল আমিন মুহাম্মাদ
ঈদের দিনে পথের শিশু
ছেঁড়া জামা গায়,
ভাগাড় থেকে খুঁটে-খুঁটে
পচা খাবার খায়।
চারিদিকে হাসিখুশি
আনন্দ হইচই,
পথের শিশু গাছের নিচে
কাঁদছে দেখো ওই।
নতুন জামা, ফিরনি-পায়েস
কে আর দেবে বল্!
মা-বাবা নাই, ঘরবাড়ি নাই
জীবন মফস্বল।
বাবার সাথে খোকা ঘোরে
খুকি মায়ের সাথ,
দেখে ওদের বুক ফেটে যায়
কপাল পোড়া জাত।
কুকুর দেখি ওদের পাশে
মায়ায় বসে রয়,
আমরা মানুষ দূরে থাকি
এটা তো ঠিক নয়।
আম্মুকে আজ বলছে খোকা
মনির চৌধুরী
আম্মুকে আজ বলছে খোকা
থাকবো আমি রোজা,
রমজান মাসের হুকুমগুলো
করবো না আর কাজা।
তুমি যখন সেহরি খাবে
আমায় দিও ডেকে,
সেহরি খেতে আসবো আমি
ভোরের ঘুমটি রেখে।
সেহরি খেয়ে নামাজ পড়ে
কুরআন পড়বো আমি,
সেহরি খেতে ওগো আম্মু
ডেকে দিও তুমি।
দাও কথা আজ আম্মু তুমি
সাজের সকাল বেলা,
সেহরি খেতে ডেকে দিতে
করবে না তো হেলা।
তুমি যদি না ডেকে দাও
সেহরি খাওয়ার সময়,
সেদিন থেকে খোকা বলে
ডাকবে না আর আমায়।
ঈদ এলে
মো. তাইফুর রহমান
ঈদ এলে ভাই মনে খুশি
উৎসব ঘরে ঘরে
উল্লাসে মন ভরে
তাইতো সবাই সবার সাথে
কোলাকুলি করে।
রোজাদারের ঈদ আনন্দ
অনেক বেশি আছে
শান্তিতে মন নাচে
ঈদ এলে ভাই স্বজনদেরকে
পাই যে আমি কাছে।
ঈদ নামাজে অংশ নিতে
সবাই দলে দলে
ঈদগাহেতে চলে
ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক
মুখে সবাই বলে।
ঈদ আনন্দে শিশুরা তো
করে মজার খেলা
কাটায় সুখে বেলা
ঘরে ঘরে মিষ্টি-সেমাই
যেন খুশির মেলা।
ঈদ আসেনি
মাহমুদুল হাসান মুন্না
রঙিন আলোয় ঘর সেজেছে
কেউ কনে কেউ বর সেজেছে
চতুর্দিকে খুশির আমেজ
কারো চোখে নিদ আসেনি,
সবার ঘরে ঈদ এসেছে
গৃহহীনের ঈদ আসেনি।
পুরান জুতো পুরান জামা
পথশিশুর নেই বাবা মা
কেউ উপহার পাঠালো না
অভিমানে হৃদ হাসেনি,
সকল শিশুর ঈদ এসেছে
পথশিশুর ঈদ আসেনি।
দরিদ্রদের কর্জ-দেনা
সেমাই সুজি হয়নি কেনা
নতুন শাড়ি পায়নি গিন্নি
তবুও মনে জিদ আসেনি,
ঈদানন্দ ছড়িয়ে পড়ুক
যাদের দ্বারে ঈদ আসেনি।
ঈদের বাঁকা চাঁদ
জাকির উসমান
আকাশ কোণে উঠলো হেসে
ঈদের বাঁকা চাঁদটা
পাড়া জুড়ে খুশির জোয়ার
ভাঙলো খুশির বাঁধটা।
কাল সকালে ঈদের নামাজ
পড়বো সবাই মিলে,
থাকবে না তো ঝগড়া-বিবাদ
হিংসা কারো দিলে।
নতুন জামা পরবো সবাই
মাখবো আতর গায়ে
সেমাই, পিঠা খাইয়ে দিবে
আদর করে মায়ে।
দুহাত তুলে প্রভুর কাছে
চাইবো পাপের ক্ষমা
ঈদের মাঠে এক জামাতে
হবো সবাই জমা।