হতাম স্বাধীন
নাঈমুল হাসান তানযীম
পাখিদের মতো যদি
হতাম স্বাধীন,
কী দারুণ মজা হতো
তাধিন তাধিন।
ডানা মেলে উড়তাম
পৃথিবীটা ঘুরতাম
এভাবেই কেটে যেত
রাত কিবা দিন।
আহা পাখিদের মতো যদি
হতাম স্বাধীন!
দুষ্টু ফড়িং ছানা
তৈয়বুর রহমান ভূঁইয়া
দুষ্টু ফড়িং ছানা,
উড়তে গিয়ে ঘুরতে গিয়ে
গাছের সাথে ঠেস লাগিয়ে
ভাঙল দু’খান ডানা।
কাঁদছে ছানা, না না!
এক্ষুণি মা দাও বানিয়ে
গোলাপ ফুলের পাঁপড়ি দিয়ে
আগের মতো ডানা।
করবে কী আর মা’য়ে!
পাঁপড়ি দিয়ে গড়ল ডানা
মেঘের দেশে উড়ল ছানা
সুবাস নিয়ে গায়ে।
শরৎ এলে
মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ হক
শ্রাবণ শেষে শরৎ এসে
বসায় রঙের হাট,
মোটে দু’মাস থাকে তবু
করে নানান পাট।
শরৎ এলে বাহার লাগে
শিউলি ফুলের ডাঁটায়,
থকথকে নীল ছায়া পড়ে
নদীর জোয়ার-ভাটায়।
শরৎ এলেই গাঙের জলে
ফোটে পদ্ম ফুল,
সাদা সাদা কাশের বনে
ভরে নদীর কূল।
আকাশ হতে পড়ে যেন
কোল-খসা নীল ছবি
উঠান ভরা মেঘের ছায়ায়
আয়েশ লাগে খুবই।
গাঁয়ের সকল কেউটে মিলে
ওড়ায় রঙিন ঘুড়ি
রুপের এমন বাহার দেখায়
মনটা করে চুরি।
ভেজাল শিশু খাদ্য
ইব্রাহিম হাসান হৃদয়
ভেজালের সয়লাব যত শিশু খাদ্য
আবদার মেটাতে কিনে দিতে বাধ্য
চকলেট আইসক্রিম বাহারি সব পণ্য
নিরাপদ নয় কিছুই শিশুদের জন্য।
বিস্কিট চানাচুর মচমচে আছে তাজা
সবকিছু হয় তবে পোড়া তেলে ভাজা
বিষাক্ত রঙে মেখে আচার হয় তৈরি
শিশু স্বাস্থ্যের জন্য যেটা খুবই বৈরী।
দেখার তো কেউ নেই চুপ সব কর্তা
ঘুষের টাকা খায় রোজ বানিয়ে ভর্তা
সচেতন না হই যদি এখনই সকলে
বাজারটা চলে যাবে মন্দের দখলে।
শরৎ সাদা
তানজিনা আক্তার
বর্ষা শেষে নতুন বেশে
আসলো শরৎ কাল
নীল আকাশে উড়ছে কতো
সাদা মেঘের পাল।
দুধ সাদা কাশ ফুলে ফুলে
সাজলো নদীর কূল
ফুটলো বাড়ির আঙ্গিনাতে
সাদা শিউলি ফুল।
নীল আকাশে উড়ে চলে
সাদা বকের ঝাঁক
ভাল্লাগে খুব শরৎ বিকেল
পাখ পাখালির ডাক।
ঋতু রাণী শরৎ ছোঁয়া
মনটা কাড়ে বেশ
এই যে আমার জন্মভূমি
সোনার বাংলা দেশ।
ফুলপরী
রফিকুল নাজিম
ফুলপরী দেখে যাও আমাদের গ্রাম
মেঘেদের বাড়ি অই ফুলতলী নাম।
পাহাড় ঝর্ণা নদী ও শাপলা বিল
আকাশে ওড়ে দেখো- শঙ্খচিল,
সন্ধ্যারা নামে রোজ নদীর ওপার
বুনোপথে দেখো কী ফুলের বাহার!
ফুলপরী শুনে যাও পাখিদের গান
জোছনায় ভেজা অই রূপালী চাঁন।
রাখাল বাজায় বাঁশি মাতাল সুরে
পরিযায়ী পাখিরা ওড়ে যায় দূরে।
ফুলপরী থেকে যাও আমাদের গাঁয়
মনপ্রাণ জুড়াবে অই বটের ছায়ায়।
শরৎ-মেঘের ছবি
মাহমুদ হাসান
শরৎ এলে নীলাকাশে
সাদা মেঘের জুটি,
সাদা পেঁজা তুলোর মতো
করে ছুটোছুটি।
রূপসী রোদ দিনে এসে
মেঘের সাথে হেসে হেসে
লুকোচুরি খেলে,
মেঘের ঠোঁটে হাসি ফোটে
রোদের ছোঁয়া পেলে।
রাতের বেলা চাঁদের ছায়া
উঁকি দিয়ে বাড়ায় মায়া
মেঘের ফাঁকে ফাঁকে।
জোছনামাখা মেঘের ছবি
আমায় কাছে ডাকে।
শরতের রূপ
আতাউর রহমান
সাদা সাদা কাশফুলে বাতাসের ঢেউ
নেচে ওঠে একসাথে হাসে কেউ কেউ।
সারিসারি ছোট না’য় জেলেদের ভিড়
পা তুলে সাদা বক দাঁড়িয়েছে থির!
তীরে তীরে কিশোরের ছোট ছোট জাল
মাছ ধরে হাসিমুখে কেটে যায় কাল।
ঘাটে ঘাটে কিশোরীর মেঘখোলা চুল
বাতাসের দোলা খেয়ে দোলে মশগুল!
মেঘে মেঘে লুকোচুরি সোনালী রোদ
বুকে আঁকে নদী-নালা এই প্রচ্ছদ!
থেকে থেকে এই দেখে মন ভরে খুব
বিধাতার সেরা দান শরতের রূপ!
শরতের শিশির
মামুন রাফী
এসেছে শরৎ, হিমের পরশ
লেগেছে হাওয়ার পরে।
সকাল বেলায় ঘাসের আগাশ
শিশিরের রেখা ধরে।
আমলকী বন কাঁপে, যেন তার
বুক করে দুরুদুরু।
পেয়েছে খবর পাতা খসানোর
সময় হয়েছে শুরু।
শিউলির ডালে কুঁড়ি ভরে এলো
টগর ফুটিলো মেলা।
মালতী লতায় খোঁজ নিয়ে যায়
মৌমাছি দুই বেলা।
গগনে গগনে বরধন শেষে
মেঘেরা পেয়েছে ছাড়া।
বাতাসে বাতাসে ফেরে ভেসে ভেসে
নেই কোনো কাজে তাড়া।।
ফুলের দেশে খুকুমণি
বিচিত্র কুমার
শিউলি ফোটা সকাল বেলা
কাশ ফুলেরা দোলে
পাখিফুল বকফুল
খুকুমণি তোলে।
সাদা সাদা প্রজাপতি
নেচে নেচে যায়
গগনশিরীষ পান্থপাদপ
চোখ ফিরিয়ে চায়।
হিমঝুরি মিনজিরি
বলে খুকু আয়
মুগ্ধ করা প্রভাত বেলা
খুকু ছুটে যায়।
গাছ তলায় ঝরে পড়া
ফুলগুলো কুড়িয়ে
রাখছে খুকু নিজের ঝুড়ি
প্রাণটা যায় জুড়িয়ে