মায়ের সেবা- নাঈমুল হাসান তানযীম

মায়ের সেবা- নাঈমুল হাসান তানযীম

দীর্ঘ তিন মাস পর বাড়িতে এসেছে খালেদ। প্রথম সাময়িক পরীক্ষার ছুটিতে। মনে ভীষণ আনন্দ। আটটি দিন খুব মজা করে কাটাবে- সে কথা ভেবে। আম্মু ওকে ভীষণ আদর করেন। বিশেষ করে যেদিন থেকে ও মাদরাসায় ভর্তি হয়েছে তারপর থেকে মায়ের আদরও যেন বেড়ে গেছে। তাই তো বাড়ি এলে আম্মা ওকে কত কিছু রান্না করে খাওয়ান- তার কোনো হিসেব নেই।
এবার খালেদ যখন বাড়িতে আসে তখন ওস্তাদজী বলে দিয়েছিলেন, বাড়ি গিয়ে যেন মায়ের সেবা করে। মায়ের কাজে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে। এতে নাকি আল্লাহও খুব খুশি হবেন। এর বিনিময়ে পরকালে জান্নাত দান করবেন। খালেদ মনে মনে নিয়ত করে রেখেছে, এবারের ছুটিতে সে মায়ের কাজে নানাভাবে সাহায্য করার চেষ্টা করবে।

আগে আম্মুই ওর জামা কাপড় সব ধুয়ে দিতেন। এবারও আসার সাথে সাথে ময়লা কাপড়গুলো একত্র করেন আম্মু। সবগুলো একটি বালতিতে পাউডার দিয়ে ভিজিয়ে রাখেন। আম্মুর কিছু কাপড়ও ভেজান সেগুলোর সঙ্গে। ও এ সুযোগটিরই অপেক্ষায় ছিল। কাপড় ভিজিয়ে আম্মুর সাথে দীর্ঘ সময় গল্প করে ও। গল্পের এক ফাঁকে ঘুমিয়ে পড়েন আম্মু। সেই সুযোগে চুপিচুপি ও গোসলখানায় আসে কাপড় ধোয়ার সাবান নিয়ে। তারপর এক এক করে সুন্দর করে ধুয়ে ফেলে সবগুলো কাপড়। এরই ভেতর হঠাৎ কাপড় কাচার শব্দ শুনে আম্মুর ঘুম ভেঙ্গে যায়। তিনি দ্রুত গোসলখানায় ছুটে যান। এসে দেখেন, খালেদ সবগুলো কাপড় ধুয়ে ফেলেছে।
খালেদের এ কাণ্ড দেখে আম্মু ওকে একটু ধমক দেন। বলেন, বোকা ছেলে, তোমাকে এসব করতে কে বলেছে?
খালেদ মায়ের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে, ওস্তাদজী বলেছেন, ‘মায়ের সেবা করলে পরকালে জান্নাত মিলে।’
ছোট্ট খালেদের মুখে এমন কথা শুনে আনন্দে চোখে জল নেমে আসে আম্মুর। খুশি হয়ে ওর কপালে চুমু এঁকে দেন আর বলেন, আল্লাহ তোমাকে অনেক বড়ো করুন বাবা!

Share on facebook
ফেইসবুক
Share on twitter
টুইটার

Leave a Comment

অন্যান্য