বিস্তীর্ণ খোলা আকাশ। রাতের আকাশে চাঁদ। কখনো চাঁদ মেঘে ঢাকা। আমাদের বাড়ির পাশেই রেললাইন। রাতে রেললাইন ধরে হাঁটতাম। খোলা আকাশের নিচে ছিলো অপার স্বাধীনতা। আকাশের চাঁদ আমাদের সাথে হাঁটতো। আমরা খুব মজা করতাম। একঝাঁক বন্ধুর আড্ডা জমতো। সে দিনগুলো কথা খুব মনে পড়ে। এখন তো চারদেয়ালে বন্দী জীবন। কোথায় সূর্য উঠে আর কোথায় ডুবে তা বুঝতেও পারি না। জানি না চাঁদ কিভাবে আলো ছড়ায়। স্মৃতিতে এখনো গ্রাম-গ্রাম মানেই ভালোবাসা।
জসিম বিন আহমাদ
দক্ষিণ কোরিয়া।
মা-বাবাকে যতটা মনে পড়ে। গ্রামকেও ততটাই মনে পড়ে। গ্রাম আর মা-বাবাই ছিলো ছোটবেলার সব। আনন্দ-উৎসব, অভিযোগ অনুযোগ সব ছিলো মা-বাবাকে ঘিরে। কখনো কখনো অভিমান করে ছুটে যেতাম গ্রামের মেঠোপথে। বসে থাকতাম গাছের ছায়ায় বা গাছের ডালে। বন্ধুদের সাথে খেলে খেলে কাটিয়ে দিতাম বেলা।
পুকুরের পানিতে ঝাপ দিয়ে গোসল করা-সাঁতার কাটা এখন মনে হয় সে সবই স্বপ্ন! সরাদিন যা-ই করি সন্ধ্যায় ফিরে আসতাম, মায়ের মিষ্টি হাসি দেখে ভুলে যেতাম সব দুঃখ কষ্ট। আমি গ্রামকে ভালোবাসি-আমি গ্রামে যেতে চাই- চোখ মেলে দেখতে চাই প্রিয় গ্রাম।
আজিজুল হক
দোহা-কাতার
গ্রাম কুয়াশার মতো মতো সুন্দর, সকালের মিষ্টি রোদের মতো মিষ্টি। মায়ের মুখের মতো ভালোবাসা। গ্রাম যেন মায়ের মুখ। অপূর্ব-ে সৌন্দর্যমণ্ডিত। যে মুখের দিকে তাকালে মনের সুখ আসে-হৃদয় প্রফুল্ল হয়।
আমি সেই গ্রামে বড় হয়েছি। বি-বাড়িয়ার কুসুমপুর গ্রামে। এখনো হৃদয়ে ছবির মতো ভাসে গ্রাম। গ্রামের কিশোর দূরন্তপনা, বিকেলের খেলার মাঠ-সাঁতার কাটার পুকুর। পৃথিবীর সব সৌন্দর্য যেখানে হার মানে তা হলো গ্রাম।
শফিক মাহমুদ
রিয়াদ- সৌদিআরব
নকীবের সব শিশু-কিশোরদের সালাম ও শুভেচ্ছা। গ্রাম নিয়ে বলতে হবে! তাই না? আমি বলবো গ্রাম ঠিক তোমার মতো। হ্যাঁ, গ্রাম শিশুর মতো উচ্ছল-কিশোরের মতো দূরন্ত।
গ্রাম-বৃষ্টির মতো ঝরঝর-বাতাসের মতো চঞ্চল।
দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ- সবুজে সবুজে সবুজের মিলনমেলা। চাঁদের মতো স্বচ্ছতা আলোর মতো মিষ্টি। এককথায় গ্রাম অপূর্ব- যেখানে শুধু সৌন্দর্যের খেলা।
নকীব বন্ধুরা তোমরা গ্রামকে ভুল না। গ্রামকে ভালোবাস। যে খানেই থাক গ্রাম থাকুক হৃদয় জুড়ে-মননে ও বিশ্বাসে।
আতিকুর রহমান
জেদ্দা- সৌদিআরব।
গতমাসেই গ্রামে এসেছি। গ্রামে আসা মানেই যে মায়ের কোলে আসা। ফুল-পাখিদের গান, গ্রামের সবুজ পরিবেশ। ঠিক আগের মতো নেই। নেই শিশুদের কোলাহল! মাঠে মাঠে হয় না ফুটবল খেলা, শহরের এক আবহ এখন গ্রামে। আমাদের সময়ের গ্রাম ছিলো নিরেট গ্রাম। এখন রাখালের গান নেই, কৃষকের গরু দিয়ে চাষ নেই।
তবুও গ্রাম ইট পাথরের শহর থেকে এখনো ঢের ভালো। শীতের সবজি, নদীর মাছ, ফসলের মাঠ, শুদ্ধ বাতাস এখনো আছে। এখনো পাখিদের কিচিরমিচির ডাকে ঘুম ভাঙ্গে। আগামীদিনে কি হবে তা জানি না। তবে বলবো গ্রাম মানুষকে সুস্থ রাখে মনকে শুদ্ধ রাখে।
তামিম সিদ্দিকী
কুয়ালালামপুর- মালেশিয়া
গ্রামের পিঠার পুলির আয়োজন পৃথিবীর আর কোথায় আছে বল? এই উৎসব শুধু বাংলাদেশে আছে বলেই মনে হয়।
প্রকৃতির কথা মনে পড়লে নিজের শৈশব-কৈশোরের উচ্ছল কথা মনে পড়ে। বঙ্গোপসাগরের উপকূল, আমার প্রিয় এলাকা আনোয়ারা, পাহাড়ঘেরা আমাদেও বৈরাগ গ্রামের কথা মনেপড়ে যায়। শরতের রাতে চাচাদের উঠোনের সামনে ফুটেথাকা বেলীফুল আর গন্ধরাজের মৌ মৌ গন্ধের কথা মনেপড়ে। শৈশবে মসজিদের সামনের গাছ থেকে ঝরেপড়া শিশিরভেজা শিউলিফুল কুড়ানোর কথা মনেপড়ে, বর্ষার বৃষ্টিতে পাহাড়ের পাদদেশে জমিতে জলখেলার কথা মনেপড়ে, খালে পুলের গোড়ায় পাড়ার বড়দের মাছধরার কথা মনেপড়ে।
মনেপড়ে মাঠ জুড়ে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, মূলা এসব সবজির কথা।
শীতের কথা বললেই মনে পড়ে শৈশবে দেখা শীতের সকাল। দূর গাঁয়ের চাষীদের কলসি মাথায় খেঁজুরের রস বেচতে আসার সেই দৃশ্য। যদিও এখন আর তেমন দেখা যায় না আমাদের গাঁয়ে। আমার গ্রামের আশেপাশের গ্রামেও খেঁজুর রস নেই আর! দূরের গ্রামে কিছু কিছু আছে।
আদিবা রহমান
ভ্যানিস- ইতালী
অনুলিখন